পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
দারোগার দপ্তর, ১৬৬ সংখ্যা।

 আমার কথা শুনিয়া ভোলা কি ভাবিল, পরে বলিল, “সেই জন্যই বুঝি আপনার এই বেশ? আচ্ছা, আমি এখনই সরকার মশাইকে জিজ্ঞাসা করিতেছি। তাহার মুখে শুনিয়াছিলাম, জনকতক লোকের দরকার।”

 আমি বলিলাম, “তবে যা একবার। যদি দরকার হয়, আমায় খবর দিস। আমি এইখানেই রহিলাম।”

 ভোলা চলিয়া গেল। আমি সেইখানেই বেড়াইতে লাগিলাম। প্রায় আধঘণ্টার পর ভোলা হাসিতে হাসিতে আমার নিকট ফিরিয়া আসিল এবং আমাকে লইয়া জমীদার বাড়ী প্রবেশ করিল।

 সরকার মহাশয় প্রবীণ লোক। তিনি আমার মুখের দিকে অনেকক্ষণ চাহিয়া রহিলেন। পরে ভোলাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “ভোলা! এ লোক তোর চেনা ত?”

 ভোলা হাসিয়া উত্তর করিল, “আজ্ঞে হাঁ, আমরা একগায়ের লোক।”

 সরকার মহাশয় বলিলেন, “লোকটীকে ভদ্রঘরের ছেলে বলিয়া বোধ হইতেছে। বাবুর যে রকম মেজাজ, তাতে এ যে এখানে থাকিতে পারিবে, এমন ত বোধ হয় না।”

 ভোলাও খুব চালাক ছিল। সে বলিল, “আপনি ঠিক বলিয়াছেন। এদের অবস্থা আগে খুব ভাল ছিল। সম্প্রতি দৈন্যদশায় পড়িয়া চাকরি করিতে আসিয়াছে।”

 সরকার মহাশয় তখন আমায় জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমার নাম কি বাপু?”

 আমি বললাম, “আমার নাম সদানন্দ।”