পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাঁশী।
৩৭

ছিলাম, সুতরাং সেখানে কোনরূপ আহার না করিয়া বাজারে আসিয়া উপস্থিত হইলাম। সেখানে একটা দোকানে বসিয়া আহার করিয়া গৃহে ফিরিলাম। পরে বিশ্রামের আশায় একস্থানে শয়ন করিলাম।

 বেলা প্রায় দুইটা বাজিল। বাড়ীর দরোয়ান ও সেই দাসী অকাতরে ঘুমাইতেছিল। বাড়ীতে জন প্রাণীর সাড়া নাই। আমি তখন গাত্রোথান করিলাম; এবং ধীরে ধীরে তেতলায় যাইলাম। দেখিলাম, প্রাণকৃষ্ণ বাবুর ঘর বন্ধ। ঘরের দরজায় দুইটী তালা লাগান রহিয়াছে। আমার কাছে তালা খুলিবার যন্ত্র ছিল, অনায়াসে দুইটী তালাই খুলিয়া ফেলিলাম এবং কোন শব্দ না। করিয়া আস্তে আস্তে ঘরের ভিতর প্রবেশ করলাম। দেখিলাম, ঘরটা প্রকাণ্ড। কিন্তু দুই ভাগে বিভক্ত। মধ্যে এক কাঠের ব্যবধান। তাহার মধ্যে একটা ক্ষুদ্র দরজা। সেই দরজা পার হইয়া ঘরের অপর অংশে যাইলাম। দেখিলাম, সেখানে তিনটা বড় বড় সেকেলে সিন্দুক। সিন্দুকের নিকট বোতলে করা দুগ্ধ, এক কাঁদি সুপক্ক রম্ভা, তিনটা কাচের বাটীতে অল্প অল্প দুধ। দুধের উপর এক একটী রম্ভা। ইচ্ছা ছিল, সিন্দুক গুলি খুলিয়া দেখি। কিন্তু অনেক চেষ্টা করিয়াও উহাদিগকে খুলিতে পারিলাম না।

 ঘরের ভিতর আর কোন আশ্চর্য দ্রব্য দেখিতে পাইলাম না। অপর অংশে বড় বড় গোটাকতক আলমারি। আলমারিগুলির মধ্যে পুরাতন খাতায় পরিপূর্ণ। ঘরের পাঁচ ছয়খানি চেয়ার, দুইখানি কোচ, একখানা প্রকাও আয়না, থানকতক বিলাতী ছবি, একটী প্রকাণ্ড ঘড়ি ও একটা আলনা রহিয়াছে। আমি