পাতা:বাঁশী - প্রিয়নাথ মুখোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দারগার দপ্তর, ১৬৬ সংখ্যা ।

লক্ষ্য করিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “কি হইয়াছে? বৌমা অমন করিতেছে কেন?”

 দাসী অতি বিষন্নবদনে উত্তর করিল,—“সুধা বড় ভয় পাইয়াছে।”

 আ। ভয় কিসের?

 দা। সুধাকে জিজ্ঞাসা করুন। উহার কথা আমি ভাল বুঝিতে পারিতেছি না।

 আমি সুধার দিকে চাহিলাম। দেখিলাম, সে মাথায় কাপড় দিয়াছে। বোধ হইল, আমাদের কথাবার্তায় তাহার জ্ঞান সঞ্চার হইয়াছিল, সে আমার কথা বুঝিয়াছিল। আমাকে তাহার দিকে চাহিতে দেখিয়া কাঁপিতে কাপিতে অস্পষ্ট ভাবে বলিল, “সেই বাঁশীর আওয়াজ! আমার বড় ভয় হইয়াছে; হয় ত আমি আর এ যাত্রা রক্ষা পাইব না।”

 বৌমার কথায় আমি আশ্চর্যান্বিত হইলাম। আমিও তাহার কথার ভাব বুঝিতে পারিলাম না। জিজ্ঞাসা করিলাম, “কোন্ বাঁশী মা? বাঁশীর আওয়াজ শুনিয়া এত ভয়ই বা কিসের? তুমি শান্ত হও; অমন অলক্ষণে কথা আর মুখে নিও না।”

 বৌমা যেন আমার কথায় একটু সুস্থ হইল, খানিক পরে বলিল, “দুই বৎসর হইল দিদির বিবাহের সম্বন্ধ স্থির হয়। বিবাহের এক সপ্তাহ আগে সেও দুই তিন দিন এই রকম হিস হিস শব্দ ও এক রকম বঁশীর স্বর শুনতে পায়। তাহার পরেই একদিন সে হঠাৎ মারা পড়ে। আজ রাত্রে আমিও প্রথমে এক প্রকার হিস হিস্ শব্দ শুনিতে পাই। শব্দ শুনিয়াই আমার প্রাণে কোন আতঙ্ক হয়। আমি উঠিয়া বামাকে ডাকি। বামা উঠিয়া আলোক