পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/১৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

»8 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড | ૭8 [] ডাক্তার মোঃ হাবিবুর রহমান সুখানপুকুর ষ্টেশন বাজার থানা- গাবতলী , জেলা-বগুড়া প্রথমবারে (২৬শে মার্চ) পাক হানাদার বাহিনী ব্যর্থ হওয়ার পর ১৩ই এপ্রিল ত্রিমুখী আক্রমণ চালিয়ে বগুড়া শহর পূর্ণ দখলে আনে। কয়েকদিন পর একদল হানাদার বাহিনী গাবতলী সি, ও, অফিসে ক্যাম্প স্থাপন করে। গাবতলী থাকাকালীণ হঠাৎ একদিন খান পশুর অত্র সুখানপুকুরে হানা দেয়। হানা দিয়ে অসংখ্য দোকানপাট ও ঘরবাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে। ৭২ জন নিরীহ জনগণকে একত্র লাইন করে মেশিনগান দিয়ে গুলি করে হত্যা করে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করা যায় যে, খান সেনারা বাজারে ঢুকেই সর্বপ্রথম আমার বাসায় অগ্নিসংযোগ করে ভস্মীভূত করে দেয়। আমি অনুমান করি যে, খান সেনারা প্রায় এক লক্ষ টাকার ধন-সম্পদ ভস্মীভূত করে দেয়। রাজাকার ও বিহারীরা বাজারের বিভিন্ন দোকানপাট লুট করে নিঃশেষ করে দেয়। জনসাধারণকে ডেকে খান সেনারা মুক্তিবাহিনী ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের খোঁজ জানতে চায়। জনগণ গ্রামে গ্রামে ঢুকে খান কুকুরেরা নিরীহ অবলা বালার প্রতি পাশবিক অত্যাচার শুরু করে । প্রথম দিনের মত খান সেনারা গাবতলিতে পুনরায় ফিরে যায়। এরপর প্রত্যেক দিন গাবতলী থেকে বর্বররা গাড়ীযোগে সুখানপুকুরে টহল দিতে থাকে। প্রত্যহ আসার পথে অথবা যাওয়ার পথে বর্বর দসু্য বাহিনী ২/৪ জনকে হত্যা না করে ফিরে যেত না। খান সেনারা গাবতলী তথা সুখানপুকুরের আশেপাশের সমস্ত জনগণের মনে ত্রাশের সৃষ্টি করেছিল। প্রত্যেকদিন তারা গ্রামাভ্যন্তরে ঢুকে মেয়েদেরকে জোর করে বা তাড়িয়ে ধরে পাশবিক অত্যাচার চালায়। কাউকে ধরে তারা ক্যাম্পে নিয়ে যেত। এদের প্রায়ই মরে যেত। আবার কেউ কেউ পশুদের হাত থেকে বেঁচে কোন রকমে বাড়ী চলে আসত। দীর্ঘদিন নির্যাতন চলার পর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর আক্রমণে শত্রর হাত থেকে নিস্তার পাই। স্বাক্ষর/ডাক্তার মোঃ হাবিবুর রহমান