পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২২৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉bbr বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড তার সাথে কথা বলতে দেখি তাকে আমরা গুলি করে মারবো। তারপর দিন রাজু নামক একজন লোককে নিয়ে যায়। কিছু সময় পর আবার তাকে নিয়ে এসে রেখে যায়। তার তিনদিন পর আমাদের রুমে এসে জিজ্ঞাসা করে ফকু কোন হায়? তোতা কোন হয়? তারপর আমরা দুজন উঠে দাঁড়ালাম। তারপর আমাদেরকে বের করে নিয়ে যায়। একটা মাঠের মধ্যে নিয়ে গিয়ে আমাদেরকে শুতে বললে আমরা দুজন মাঠের মধ্যে শুয়ে পড়ি। তারপর আমাকে এমন জোরে একটা বেতের লাঠি দিয়ে পিঠে আঘাত করে যে আমি সহ্য করতে না পেরে ছুটাছুটি করতে থাকি। আবার আমাকে ডেকে নিয়ে শুতে বলে, আমি মাটিতে শুয়ে পড়ি। তারপর আমাকে কতকগুলি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। যেমনঃ (1) তোমার রাইফেল কোথায়। (2) তুমি রাইফেল ধরেছ কিনা।ৎ (3) তোমার গ্রামে যে ১৫/১৬ জন লোক রাইফেল ধরেছিল তাদের নাম বলো। তাদের নেতা কে | (4) তোমাদের গ্রামের কারা ই,পি, আরদের খেতে দিয়েছে। (5) তুমি ছাত্রলীগ কিম্বা আওয়ামী লীগ করো কিনা। (6) যশোরে মুজিবের মিটিং-এ তুমি ছিলে কি না। (7) মিটিং-এ সে কি বলেছিল। (8) মিছিলে কি কি বলা হয়। (9) জয় বাংলার মানে কি। (১০) তোমার ভাই কোথায়। (১১) তুমি কি কর। (১২) তোমাদের গ্রামে যে মেজর যেত তাকে তোমরা কেন মেয়ে জোগাতে না। (১৩) ভারতে কে গিয়েছে। সুবেদার মেজর শাহজি আমাকে সবগুলি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে। আমি মারের দরুন থাকতে না পেরে কিছু কিছু প্রশ্নের উত্তর স্বীকার করি আর যে গুলো বেশী জরুরী সেগুলো স্বীকার করি না। মারের নিয়মগুলো নীচে বর্ণনা করা হলো। (1) প্রথমে মাটিতে উপুড় করে শুইয়ে দিত। তারপর বেতের লাঠি দিয়ে ঘাড়ে এবং পায়ের তালুতে মারতে থাকে। লাঠি দিয়ে মারা শেষ হলে আবার বুট দিয়ে পিঠের উপর উঠে খচতো বা পাড়াতো। (২)দ্বিতীয় নিজ কায়দা হলো চুল ধরে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে ঠাশ করে ঘাড়ে একটা চড় কশিয়ে দিয়ে ছেড়ে দিত। (৩) পা উপরে দিয়ে মাথা নিচে দিয়ে একটা ঘরের মধ্যে রশির সঙ্গে লটকিয়ে রাখতো। (৪) বস্তার মধ্যে পুরে দিয়ে বস্তার মুখ বেঁধে পিটিয়ে মেরে ফেলতো।