পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/২৭৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Տ85 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড | ૨૦ ૨ |ી আলী হায়দার খান পিরোজপুর কর্নেল আতিকের নেতৃত্বে পাকসেনারা হুলার হাট আসে। ঢুকেই ঘরবাড়ী জালাতে থাকে। মুসলিম লীগাররা তাদেরকে স্বাগত জানায়। পাক সেনারা বলে হিন্দু বাড়ী কোথায়? এরপর থেকে হিন্দু ঘরবাড়ী জালাতে থাকে। লুটপাট হত্যা অনবরত করতে থাকে। পিরোজপুর মহকুমা প্রশাসক মহিবুল্লাহ শাহ (সিন্ধী, পাকিস্তানের বিশিষ্ট ন্যাপ নেতা বাকের শাহর ভাইপো) আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সম্পূর্ণ সমর্থক ছিলেন। তিনি বলেছিলেন দোস্ত তোমরা তো স্বাধীনতা পেয়েই যাচ্ছো, আমরা পেলাম না। ৫ই মে ষড়যন্ত্র করে ওসি ভারপ্রাপ্ত এসডিও আব্দুর রাজ্জাক (২) এসডিপিও ফয়জুর রহমান আহমেদ (৩) ম্যাজিষ্ট্রেট মিজানুর রহমানকে ডেকে আনিয়ে মিটিং শেষ করে তাদেরকে গুলি করে হত্যা করে। বাড়ীঘর লুট করে। এরপর অত্যাচার শুরু করে। পিরোজপুরের চৌদআনা ঘর দুয়ার ধ্বংস করেছে, লুটপাট করেছে। পাক সেনারা হুকুম দেয় প্রতি ইউনিয়ন থেকে ২০ জন করে যুবক দিতে হবে। এই মোতাবেক গ্রাম থেকে ধরে ধরে শত শত লোককে হত্যা করেছে। ৪ হাজারের বেশী লোককে পাক সেনারা হত্যা করেছে। ভাগিরথী নামে স্পাই সন্দেহে ধরে গাড়ীর পিছনে বেঁধে সারা শহর ঘুরিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। সম্পূর্ণ উলঙ্গ অবস্থায় বিশিষ্ট ছাত্র ইউনিয়ন নেতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র গণপতি হালদারকে (ম্যাট্রিকে প্রথম, আইএসসি-তে প্রথম) নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। দৈনিক হত্যা করেছে। ঘাটের পাড়ে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করেছে। গাছের সাথে বেঁধে বেয়োনেট চার্জ করেছে। চিৎ করে শুইয়ে বাঁশের গোড়া দিয়ে পিটিয়ে হাড় সম্পূর্ণ ভেঙ্গে গেলে বেয়োনেট দিয়ে হত্যা করেছে, পিটিয়ে অনেককে হত্যা করেছে। বেঁধে পায়ে আগুন চেপে ধরেছে, সুচ ফুটিয়েছে। এসডিওর বাংলোতে যেখানে পাক ক্যাম্প ছিল সেখানে অসংখ্য নারীকে ধর্ষণ করেছে। ফুলু রানী বিশ্বাসের (কলেজ ছাত্রী) উপর অমানুষিক দৈহিক নির্যাতনের ফলে তার মৃত্যু ঘটে। সমস্ত থানাতেই পাক সেনারা ব্যাপক নির্যাতন চালিয়েছে। স্বাক্ষর/আলী হায়দার খান ১৬/৮/৭৩