পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՏbrԳ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড lこ○〉 l মোঃ সামসুল হক বাংলাদেশ রেলওয়ে পাহাড়তলী, চট্টগ্রাম ১০ই নভেম্বর। সেদিনটি ছিল ২০শে রমজান। পাহাড়তলীতে বাঙ্গালী মা বোনদের উপর বিহারী ও পাকসেনারা যে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালাইয়াছিলো দুনিয়ার স্বাধীনতার ইতিহাসে তা বিরল। ১০ই নভেম্বর খুব সকাল বেলা পাহাড়তলীর পাঞ্জাবী লাইন, ওয়ারলেস কলোনী, বাহাদুর শাহ কলোনীর শিশু, যুবক, যুবতী, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধকে কলোনীর বাসা হইতে জোরপূর্বক ধরিয়া আনে এবং পাহাড়ে দল বাঁধিয়া নিয়া যায়। সেখানে জল্লাদেরা ধারাল অস্ত্র ও স্বয়ংক্রীয় অস্ত্ৰ দিয়া দয়ামায়াহীন অবস্থায় হত্যাযজ্ঞ চালায়। সকাল হইতে বেলা তিনটা পর্যন্ত এই হত্যাযজ্ঞ অব্যাহত থাকে। আমরা কয়েকজন আবছার উদ্দিন, আবদুস ছোবাহান ও মোঃ ছাবেদ মিয়া হত্যাযজ্ঞ পাহাড়ের জঙ্গল হইতে দেখিতে পাই। সাথে সাথে ডবলমুরিং থানার সহিত যোগাযোগ করি। কিন্তু তাহারা ছলচাতুরী ঈরে দুপুরে মুসলম লীগ, জামাতে ইনলামী ও পি, ডি পির দালালদিগকেও এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা বলিয়াছে। সেইদিন নর ঘাতকরা এক এক বারে আনুমানিক দুইশত লোককে হত্যা করিয়া তাহাদের শরীরের কাপড়গুলি একত্রিত করিয়া পেট্রোল দিয়া জালাইয়া দিয়াছিল। ১০ই নভেম্বর তিনটার সময় একজন সামরিক অফিসারসহ অনেকে ওয়ারলেস কলোনী দেখিতে আসে। সাথে আমরা প্রায় তিনশত লোক তাহাদের সাথে উক্ত জায়গায় গিয়া পৌছাই। হাজার হাজার নারী পুরুষের লাশ পড়িয়া আছে। কোথাও কোথাও মৃতদেহ গুলি একত্রিত করিয়া পেট্রোল দিয়া জুলাইয়াছে। এই হত্যাযজ্ঞ দেখিয়া পাঞ্জাবী সামরিক অফিসার ও তাদের দালালরাও ঠিক থাকিতে পারে নাই। নর পশুরা আত্মীয়স্বজনকে লাশ দিতে অস্বীকার করে। পাহাড়ের উপরে নির্লজ্জ অবস্থায় অনেক যুবতী ও নারীদেহ ক্ষতবিক্ষত অবস্থায় পড়িয়া আছে। এমনিভাবে মা বোন দিগকে নির্মমভাবে হত্যা করা হইয়াছে। স্বাক্ষর/ মোঃ সামসুল হক। ৭/৪/৭৩