॥ ২৩৪॥
আব্দুল গোফরান
গ্রাম- পদিপাড়া
থানা- বেগমগঞ্জ
জেলা- নোয়াখালী
২২শে এপ্রিল ১৯৭১ সালে মাইজদি এবং চৌমুহনী বাজারে পাকসৈন্য প্রবেশ করে। আমি তখন হোটেল জায়েদীতে কাজ করি। পাক বাহিনী যখন প্রবল বাধা সত্ত্বেও চৌমুহনী বাজারে প্রবেশ করিল তখন আমি মনে স্থির করিলাম যে কি করিয়া এই বাজার হইতে বাহির হইয়া যাইতে পারি। যখন দেখিলাম যে পাক বাহিনী রাস্তার ভিতর নাই, তখন আল্লাহর নাম স্মরণ করিয়া এক পা দু পা করিয়া হাঁটিতে আরম্ভ করিলাম। কিছু দূর যাওয়ার পর একজন পাক দস্যু আসিয়া আমাকে বলিল হ্যাণ্ডস আপ। হ্যাণ্ডস আপ অর্থ কি আমি বুঝিতে না পারিয়া সোজা হইয়া দাঁড়াইয়া রহিলাম। পাক দস্যু আসিয়া আমাকে ভীষণভাবে চপেটাঘাত করিল। চপেটাঘাত করার পর আমি মাটিতে পড়িয়া যাই। যেখানে পড়িয়া যাই ঐখান হইতে আমাকে চৌমুহনী প্রকৌশল বিদ্যালয়ের উত্তর পাশের রোডে নিয়া আসে। এখানে আনিয়া আমাকে বার দুই প্রশ্ন করে যে মুক্তিবাহিনী কোথায়। আমি বলি মুক্তিবাহিনী দেখি নাই। আমার জবাবে আশ্চর্যান্বিত হইয়া বলে বেটা মুক্তিবাহিনীকে মাছ, ভাত দিতে পারিস আর এখন বলিস মুক্তিবাহিনী দেখি নাই। তৎক্ষণাৎ পাক নরপশু তাহার ব্যায়নেট বাহির করিয়া আমার ডান হাতের একটা আঙ্গুল তুলিয়া ফেলে এবং বলে এখন সত্যি কথা বল। আমি বলি না হুজুর আমি মুক্তিবাহিনী দেখি নাই। তখন আবার ডান হাতের তালু ছিদ্র করিয়া দিল। এমন অবস্থাতেও আমি বলি নাই মুক্তিবাহিনী কোথায়।
স্বাক্ষর/-
আব্দুল গোফরান
২১/১/৭৩