পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

২৯৩ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড l >めと l মো: আনছার আলী থানা- বেগমগঞ্জ জেলা- নোয়াখালী ২২শে এপ্রিল ১৯৭১ সনে মুক্তি বাহিনীর প্রতিরোধ করা সত্ত্বেও পাক বাহিনী মাইজদি ও চৌমুহনী বাজারে প্রবেশ করে। পাক বাহিনী চৌমুহনীতে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে কারফিউ জারি করে। তখন আমরা দোকান পাট বন্ধ করিয়া ঘরের মধ্যে বসিয়া থাকি। এই সময় আমি গুলশান চায়ের দোকানে কাজ করি। যখন কারফিউ শেষ হইল তখন আমি দোকানে চা তৈরী করিতেছি। এমন সময় পাক নরপশুরা আমাদের দোকানে প্রবেশ করিল। দোকানে আসিয়া আমাকে বলিল বেটা একটা চা দে তো। আমনি আমি একটা চা তৈরী করিয়া দেই। চা খাওয়ার পর আমাকে বার বার প্রশ্ন করে বেটা তোরা তো মুক্তিবাহিনীকে ভাত, মাছ দিয়াছিস, বল এখন মুক্তি কাহা হায়? আমাকে পাক বাহিনী বলে ঝুট নাহি বলতা হয়। আমি বলি না হুজুর আমি মুক্তিবাহিনী দেখি নাই। এই বলার সঙ্গে সঙ্গে পাক দস্য আমার উপর ভীষণভাবে রাগান্বিত হইয়া বলিল ভাত, মাছ দিতে পারিস আর এখন বলিস মুক্তিবাহিনী দেখি নাই। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমার শরীরের প্রতি লক্ষ করে এবং গুলি করে। গুলি আসিয়া আমার উরাতের ভিতর প্রবেশ করে। আমি তখন জ্ঞান হারাইয়া মাটিতে পড়িয়া যাই। এমন সময় দুইটা লোক আমাকে দোকানের ভিতর প্রবেশ করে। আমাকে দেখিয়া তাহারা বলাবলি করিতে লাগিল যে লোকটা বাঁচিতে পারে। এই লোক দুইটা আমাকে চিনিত, তাহারা আমাকে ধরিয়া আমার বাড়ীতে নিয়া যায়। কিছুক্ষণ পর ধীরে ধীরে আমার বাড়ীতে লোকজন আসিতে লাগিল। তখন আমি আমার পাড়া প্রতিবেশী মো: নজির উদ্দিনকে ডাকিয়া বলি ভাই আমার জমি তোমায় লিখিয়া দেব তুমি আমার চিকিৎসার ব্যবস্থা করিয়া দাও। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে মো: নাজির উদ্দিন করিতে আমাকে আরোগ্য করিয়া তুলিল।