পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খণ্ড
৩০৪

॥ ২৪৭॥

হাজী ছানু মিয়া

গ্রাম- মির্জানগর

থানা- পরশুরাম

জেলা- নোয়াখালী

 পাক বাহিনী ২৫শে মে ফেনী হইতে পরশুরাম দখল করিয়া নেওয়ার পর আমাদের ১নং মির্জানগর ইউনিয়নের বহুলোক আত্মরক্ষার জন্য ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে আশ্রয় গ্রহণ করে। আমার একমাত্র ছেলে ও ছেলের বধু ও দুই শিশু সন্তানসহ ত্রিপুরার রাজনগরে আশ্রয় নেয়। আমি এবং আমার সহধর্মিনী হালিমা খাতুন বাড়ীতে ছিলাম। প্রায় ২০০ পাক বাহিনী ১০ই জুলাই মির্জানগরে প্রবেশ করে এবং সেইদিন মির্জানগর প্রাথমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ও গ্রামের অন্যান্য স্থানে শিবির স্থাপন করিয়া থাকে। রাত্রে পাক বাহিনী গ্রামের নিরীহ নারীদের উপর অত্যাচার করে। ১৫ই জুলাই অধিক রাত্রে আমার বাড়ীতেও পাক বাহিনী হামলা করে।

 ১৫ ই জুলাই রাত্রে মির্জানগর গ্রামে যুবতী বৃদ্ধা কেহই পাক নরপশুদের হাত হইতে রক্ষা পায় নাই। গ্রামের হাঁস, মোরগ, খাসী, ছাগল সবই নিয়া যায়। ভারত সীমান্ত অতি নিকটে বলিয়া মুক্তিযোদ্ধারা মির্জানগরে পাক সৈন্যদের অবস্থান জানিতে পারিয়া ভোর রাত্রে প্রবল আক্রমণ চালায়। মুক্তিবাহিনীর আক্রমণের সম্মুখে টিকিতে না পারিয়া ১৬ই জুলাই সকাল ৯টায় মির্জানগর ছাড়িয়া পরশুরামে চলিয়া যায়। নরপশুদের শিবির ছাড়িয়া যাওয়ার পর প্রায় প্রত্যেক শিবির হইতে জ্ঞানহীন অবস্থায় মা-বোনদিগকে মুক্তিযোদ্ধারা উদ্ধার করে।

স্বাক্ষর/-

হাজী ছানু মিয়া