HIක বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড լ Ջ( Ջ եւ মোছাঃ পিয়ারা খাতুন গ্রামঃ- পূর্ব চর চান্দিয়া সংসার চালায়। পাক বাহিনী আমাদের সোনাগাজী থানায় শিবির স্থাপন করিলে আমরা আত্ম রক্ষার জন্য অন্য এলাকায় চলিয়াযাই এবং দেড় মাসের মত আত্ম গোপন করিয়া থাকি। ১৫ই অক্টোবর তারিখে মুক্তি যোদ্ধারা পরবর্তী সময়ে আর সোনাগাজী থানা দখলে রাখিতে পারিল না। তাহারা পাক বাহিনীর প্রবল আক্রমণে টিকিয়া থাকিতে না পারিয়া পল্লী গ্রামের আনাচে কানাচে আত্মগোপন করে। খাওয়াই। মুক্তিযোদ্ধাদের এইরূপ আশ্রয় দেওয়ার সংবাদ কয়েকজন দালাল পাক বাহিনীর নিকট পৌঁছায়। পাক সেনারা উক্ত সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন রাজাকারসহ ৭জস পাক সেনা রমজান মাসের ৫ই তারিখে আমাদের গ্রামে আকস্মাৎ আক্রমণ করে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের তল্লাশ করিতে থাকে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে উক্ত দিনের পূর্বেই মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের বাড়ী ত্যাগ করিয়া অন্য গ্রামে আশ্রয় লইয়াছিল। পাক সেনারা এবং রাজাকাররা অনেক খোঁজাখুজি করার পর যখন মুক্তিযোদ্ধাদের না পায় তখন গ্রামে লুটতরাজ আরম্ভ করে এবং আওয়ামী লীগ কর্মীদৈর ও হিন্দুদের বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করিতে থাকে। পাক বাহিনীদের বিভিন্ন বাড়ীতে অগ্নি সংযোগ করা ফলে প্রায় সমস্ত গ্রামেই ছড়াইয়া পড়ে, তখন আমি ভয়ে আমার পিতার সঙ্গে অন্য গ্রামে পালাইবার জন্য চেষ্টা করি। কিন্তু বাড়ী হইতে বাহির হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একজন রাজাকার আমাকে আমার পিতার হাত হইতে ছিনাইয়া লয় এবং পাক বাহিনীর নিকট সমর্পন করে। আমার পিতাকে বেদম প্রহার করার পর তাহাকে একটা গাছের সহিত রশি দ্বারা বাঁধিয়া রাখে। এদিকে আমি খুব চিৎকার আরম্ভ করি। কিন্তু নরপশুরা আমার কথায় একটুও কর্ণপাত করিল না, তাহারা হিংস্র দানবের মত আমার শরীরের উপর ঝাঁপাইয়া পড়ে। এই ভাবে ৭জন পাক সেনাই আমার শরীরের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। আমি অজ্ঞান হইয়া পড়িলে তাহারা আমাকে ফেলিয়া রাখিয়া যায়। প্রায় ১০ ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরিয়া পাই এবং সুস্থ বোধ করি। পরের দিন বেলা ১০টার সময় আবার পুনরায় ইক্ত রাজাকারের চক্রান্তে আর তিনজন পাকসেনা আমাদের বাড়ীতে আসে এবং আমার শরীরের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায়। টিপসহি/মোছাঃ পিয়ারা খাতুন
