পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○○b বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ঢাকা প্রেসক্লাবের উপর ট্যাঙ্কের | বাংলাদেশে গণহত্যা বাংলার বাণী ১৯৭২ বোমাবর্ষণ প্রেসক্লাবের সম্মুখ দিয়ে যে রাজপথ গেছে সেটা ছিল ঢাকার সেকেণ্ড আপারেশনাল সড়ক অভিযান -ফয়েজ আহমদ প্রেসক্লাবের সম্মুখ দিয়ে যে রাজপথ গেছে, সেটা ছিল সেকেণ্ড অপারেশনাল রুট-রাজধানী ঢাকার উপর গণহত্যা অভিযানে জল্লাদ বাহিনীর দ্বিতীয় সড়ক। এখন সেটা স্বাধীন বাংলাদেশের ফরেন অফিস এবং এক সময় কমিশনার্স অফিস বলা হতো। সেই ইমারত আজ অঙ্গন রাতারাতি গড়ে উঠেছিল গেরিলা কৌশলে ট্রেনিংপ্রাপ্ত জেনারেল মিঠার অধীনস্থ অফিসারদের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি। ঢাকার সাংবাদিকদের ক্লাবটা তার প্রায় উল্টো দিকে-গুলী গোলার পাল্লার মধ্যে। মুক্তিযুদ্ধের ন’মাসে প্রত্যেকটি নাগরিকের চরম বিপর্যয়পূর্ণ কাহিনীগুলো এক দিকে যেমন পৃথক পৃথক সত্তা নিয়ে প্রকাশ পায়, অপরদিকে সব ঘটনার সামগ্রিক একটা আদল আছে। ঘটনার প্রচণ্ডতা, তার বীভৎস রুপ আর পরিণতি প্রকৃত বিচারে একই। দেশের সাড়ে সাত কোটি মানুষের উপর বিভীষিকাময় আক্রমণ ও অবিশ্বাস্য হত্যাকাণ্ডের সার্বিক ইতিহাসের মধ্যে প্রেসক্লাবের ঘটনা অসাধারণ উল্লেখযোগ্য কিছু নয়। এই ক্লাবটাকে কেন্দ্র করে ইয়াহিয়ার সামরিক শাসনবিরোধী কোন ব্যাপক প্রত্যক্ষ বিদ্রোহ দেখা দিয়েছিল বা সে সময় সেখানে শাসন বিরোধী আন্দোলন অত্যন্ত প্রকট ছিল, তা নয়। তবে সৎ ও বলিষ্ঠ সাংবাদিকগণ সে সময় প্রকাশ্যভাবে বাংলাদেশের স্বাধিকারের প্রতি, মুক্তির প্রতি সমর্থন জুগিয়েছেন। তখন বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের কণ্ঠে যে ধ্বনি উঠতো সেসব সাংবাদিকের মুখমণ্ডলে তা প্রতিভাত হতোঅনেকের কলমের ডগায় সেটা আরো স্পষ্ট ছিল। দেশের হাজার হাজার বিভিন্ন মতের প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যেভাবে সমর্থন জুগিয়েছিল শেখ সাহেবকে তাঁর হস্ত শক্তিশালী করার জণ্যে, ঢাকায় বা অন্যান্য স্থানের সাংবাদিকরাও তেমনি সমর্থন দিয়েছিলেন (কিছুসংখ্যক সাংবাদিকের ভূমিকা অবশ্যই প্রশ্নাতীত নয়)। তাছাড়া এমন অনেক বন্ধু ছিলেন, যারা তাস পেটানো, আড্ডা জমানো, সস্তায় খাদ্য প্রহণ ব্যতীত কোন ঝামেলায় যেতেন না। সাংবাদিকদের ক্লাব কক্ষের এই সাধারণ পরিবেশটা অবশ্যই অস্ত্রধারী বিদ্রোহীদের সমতুল্য নয়। এমনকি অনেকে এই ক্লাবগোয়ারদের বিরুদ্ধে নিক্রিয়তার অভিযোগ এনেছেন। বিরুপ মন্তব্য করতে কুষ্ঠা বোধ করেননি। সেক্ষেত্রে তবুও শহরের প্রাণকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠিত প্রেসক্লাবের উপর সেল নিক্ষেপের প্রয়োজন দেখা দিল কেন? ক্লাব ইমারত ধ্বংস করে দিলেই যে সচেতন সাংবাদিকের বিলুপ্তি ঘটবে, তা নয়। সাংবাদিক ইউনিয়ন বা ক্লাব কমিটির সদস্য বিনা দ্বিধায় সামরিক শাসকদের পদানত হয়ে সর্বক্ষেত্রেই যে কলমের ব্যবসা করবেন, সে কথাও গ্রহনযোগ্য হবে না। এবং ব্রাস-হ্যাট জেনারেলগণ সে কথা জানতেন। তবু কেবলমাত্র খেয়ালের বশে নয়, পরিকল্পিত পন্থায় প্রেসক্লাবের উপর ২৫শে মার্চের রাতে ট্যাঙ্ক থেকে শেলবর্ষণের তাগিদ দেখা দেয়। দেড় বছর আগের প্রেসক্লাবে শেলবর্ষণের পর থেকে বন্ধু-বান্ধব ও অনেকে এই ঘটনার কারণ সম্পর্কে বহু আলোচনা করেছেন। সমগ্র দেশটা পুড়িয়ে খাক করে দেয়ার, ত্রিশ লক্ষ শান্তি প্রিয় মানুষকে নির্বিচারে হত্যার