পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○どWど বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে পাক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের | দৈনিক বাংলা | ২১শে জানুয়ারী ও ৩ ফেব্রুয়ারী ওপর দুটি প্রতিবেদন ՏծԳՀ ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে ধীরেন দত্ত ও লে: কর্নেল জাহাঙ্গীরসহ শত শত বাংগালীকে গুলে করে হত্যা করা হয় সাখাওয়াত আলী খান প্রদত্ত ২৫শে মার্চের কালোরাতে জল্লাদ ইয়াহিয়ার দখলদার বাহিনী বাংলাদেশের জনগনের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ার পর কুমিল্লার ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে কি ঘটেছিল? উল্লেখযোগ্য যে হানাদার বাহিনী যে সমন্ত ক্যান্টনমেন্টে সবচেয়ে বেশী হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল, ময়নামতি তার মধ্যে অন্যতম। ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে যে সমস্ত বাংগালী সামরিক অফিসার ও জোওয়ান আটকা পড়েছিলেন তাদের মধ্যে প্রায় কেউই বেরিয়ে আসতে পারেননি। বাংগালী সামরিক অফিসারদের পত্নীরা কেউ কেউ বেরিয়ে আসতে পেরেছিলন, কিন্তু তারাও বন্দী অবস্থায় থাকায় প্রকৃত ঘটনার কথা বেশী জানতে পারেননি। কাজেই অনেক ক্ষেত্রেই ময়নামতির মত কাব্যিক নামের একটি স্থানে নরপিশাচরা যে নারকীয় হত্যালীলা চালিয়েছিল, তার প্রত্যক্ষদশী ১ জনার কাছ থেকে আমরা সেখানকার ঘটনার বিবরণ পেয়েছি। এ দুজনের মধ্যে একজন হচ্ছেন, সাবেক পাকিস্তানী গোলন্দাজ বাহিনীর সেকেণ্ড লেফটেন্যান্ট ইমামুজ্জামান এবং অপর জন হচ্ছেন ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টের বেসামরিক কর্মচারী শ্রী রমনীমোহন শীল। শ্রী রমনীমোহন শীল ক্যান্টনমেন্টে ক্ষেীর কর্ম করতেন। প্রথমোক্ত লেফটেন্যান্ট ইমাম বেঁচেছেন সম্পূর্ণ অলৌকিকভাবে । তিনি জানিয়েছেন যে, তার বেঁচে থাকার এবং মুক্তি সংগ্রামে অংশগ্রহণের কথা তার বাবা যেন এখনো বিশ্বাস করতে চান না। ২৯শে মার্চ লেফটেন্যান্ট ইমামুজ্জামানকে হানাদার বাহিনীর লোকেরা গ্রেফতার করে নিয়ে আরো ১ জন সামরিক অফিসারের সংগে একটি ঘরে বন্দী করে রেখেছিলো। ২০শে মার্চ বিকাল চারটার সময় একজন হানাদার সৈন্য ঘরে ঢুকে স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয় অস্ত্রের সাহায্যে এই তিনজন অফিসারের উপর গুলি চালায়। লেফটেন্যান্ট ইমামুজ্জামানের সংগী অপর ২ জন অফিসার সংগে সংগেই প্রাণ হারান। লেফটেন্যান্ট এর গায়েও গুলি লাগে এবং তিনি মনে করেন যে, তার মৃত্যুও হতে যাচ্ছে গুলি করে সৈন্যটি বেরিয়ে যাওয়ার পর সেখানে একজন সামরিক অফিসার হত্যালীলা তদারক করতে আসে। এ সময় ইমামুজ্জামান মরার ভান করে পড়ে থাকেন। অফিসারটি তাদের দেখতে এসে বলে ঠিক হ্যায় বাংগালী সব খতম হো গিয়া। এরপর পৃথিবীর বুকে নেমে আসে ঘন কালোরাত্রি। লেফটেন্যান্ট ইমাম ও অন্যান্যরা যে ঘরে ছিলেন তার বাইরে সেন্ট্রি পাহারা দিতে থাকে। ইমাম এসময় দেখেন যে, তিনি নড়াচড়া করতে পারছেন। হাতের কৰ্ত্তী চোখের পাশে এবং কাঁধে গুলে লাগলেও কি আশ্চর্য ইমাম উঠে দাঁড়ালেন। বিস্ময়াভিভূত ইমাম দেখলেন শুধু উঠে দাঁড়ানোই নয়, তিনি হাঁটতেও পারছেন। মুহুর্তে সংকল্প ঠিক করলেন ইমাম যিনি কাকুলের সামরিক একাডেমিতে পাঞ্জাবী ইন্সপেক্টরদের বাংগালী দাবিয়ে রাখার চেষ্টা সত্ত্বেও তার ব্যাচে ৪র্থ স্থান লাভ করে কমিশন পেয়েছিলেন। তিনি ঠিক করলেন পালাতে হবে, বেরিয়ে যেতে হবে, এই নরক পুরী থেকে। ধীরে ধীরে এগিয়ে মৃত সহকর্মীদের দিকে আরেকবার তাকিয়ে ইমাম পিছনের জানালার কাছে গেলেন। টুক করে জানালা খোলার শব্দ