পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৩৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ՖՆյԳ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড হলো, বাইরে সচকিত হয়ে গেল প্রহরী। মুহুর্ত বিলম্ব না করে বাইরে লাফ দিলেন তিনি। ধপ করে আওয়াজ হওয়ায় লাশ প্রহরারত প্রহরী ভাবল ভূত দেখছে, চিৎকার করে উঠল সে। ইমাম গায়ের শক্তি দিয়ে দৌড় দিলেন, চললেন অন্ধকারে। এর মধ্যে গুলি হতে থাকল কিন্তু ভাগ্য ভালো ইমামের, একটা গুলিও তার গায়ে লাগেনি। কখনো দৌড়ে, কখনো হেঁটে, কখনো ক্রল করে ইমাম বেরিয়ে এলেন অন্ধকার মৃত্যুপুর থেকে। সকালের আলোয় তিনি দেখলেন এক বুক সহানুভূতি নিয়ে তাকে ঘিরে দাঁড়িয়ে গ্রামবাংলার অনেক মানুষ। যেন মায়ের কোলে ফিরলেন আহত ইমাম। তিনি যত্ন পেলেন, পেলেন সেবা। সীমান্ত পেরিয়ে চলে গেলেন আরো অনেক অনেক মুক্তিযোদ্ধার সংগে যোগ দিতে। ইমাম আমাকে জানালেন, বন্দী অবস্থায় তিনি ঘরের জানালা দিয়ে বাংগালীদের গুলি করে হত্যা করতে দেখেছেন । এক জায়গায় বাংগালী ছেলেরা ভলিবল খেলছিল, তিনি দেখলেন হঠাৎ একটি হানাদার সেখানে গিয়ে গুলি চালিয়ে সবাইকে ধরাশায়ী করল । তারপর শুরু হলো প্রচণ্ড গোলাগুলি। ইমাম তার সংগীদের আর্তচীৎকার শনেছেন এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে মরতে দেখেছেন। তিনি বললেন আসলে শয়তান হচ্ছে গোলন্দাজ বাহিনীর লেঃ কর্নেল ইয়াকুব মালিক। ময়নামতি ক্যান্টনমেন্টে হত্যাযজ্ঞ সেই সংঘটিত করেছিল। মূলত: তার নির্দেশেই চলে এই হত্যাযজ্ঞ। এছাড়া মেজর সুলতান, ক্যাপ্টেন জাহিদ জামান, মেজর মোহাম্মদ ইয়াসিন খোকার (এই পশু নিজ হাতে গুলি করে মেজর আনোয়ারুল ইসলাম, লেফটেন্যান্ট সালাহউদ্দিন এবং সেকেণ্ড লেফটেন্যান্ট আতিকুর রহমান সিরাজীসহ আরো অনেককে হত্যা করেছে।) ক্যাপ্টেন ইকতেখার হায়দার (এই অফিসারের নেতৃত্বে কুমিল্লা পুলিশ লাইনে হামলা চালানো হয়) লে: কর্ণেল মালিকের নেতৃত্বে ২৯শে মার্চ কুমিল্লা শহরে গোলাবর্ষণ শুরু করা হয়। ক্যাপ্টেন আগাবোখারি ও সুবেদার মেজর সুলতান এবং আরো অনেক হানাদার নরপিশাচ নারকীয় উল্লাসে মেতে নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালায় বলি ইমাম জানান। সুবেদার মেজর ফয়েজ সুলতান সম্পর্কে লেফটেন্যান্ট ইমাম বলন যে, এই নরপশু ক্যাপ্টেন নুরুল ইসলামসহ বহু লোককে হত্যা করেছে। পাগলা কুকুরের মত এই নরখাদক ক্যান্টনমেন্টে যত্রতত্র ঘুরে বেড়াতো এবং বাংগালী দেখলেই গুলি করে হত্যা করতো। ময়নামতি ক্যান্টনমেণ্টে যে সমস্ত শহীদ বাংগালী সামরিক অফিসারদের কথা বললেন, তাদের মধ্যে রয়েছেন, লেঃ কর্ণেল জাহাংগীর, লেঃ কর্ণেল আনোয়ারুল ইসলাম, মেজর খালেক, মেজর শহিদুজ্জামান, খ্যাপ্টেন হুদা, ক্যাপ্টেন বদরুল আলম লেফটেন্যান্ট ফারুক, লেফটেন্যান্ট এনামুল হক, লেপটেন্যান্ট তুর্কে (ডাকনাম), ক্যাপ্টেন আইয়ুব আলী, লে: সালাউদ্দিন, সেকেণ্ড লেফটেন্যান্ট আতিকুর রহমান, সেকেণ্ড লে: হারুনুর রশিদ, ক্যাপ্টেন নুরুল ইসলাম, ক্যাপ্টেন সিদিক প্রমুখ। প্রত্যক্ষদশী রমনী শীলের বিবরণ এরপর আমাদের উল্লেখ করতে হয় নর সুন্দর রমনী শীলের কথা। অত্যাবশ্যকীয় কাজে নিযুক্ত থাকায় সম্ভবত: হানাদারেরা অন্যান্যদের সংগে বন্দী করে নিয়ে গিয়েও একে হত্যা করেনি নিজেদেরই স্বার্থে। হয়ত তারা ভেবেছিল পরে সুযোগ বুঝে এদের হত্যা করা যাবে। ক্ষেীর কর্মের মত অত্যাবশ্যকীয় দেবপুর