পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৯২ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ”আমার ভাইকে তোমরা হত্যা দৈনিক ইত্তেফাক ২২ জানুয়ারী, ১৯৭২ করো না” সৈয়দ আকবর হোসেন মিত্র বাহিনী ও মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্বার আক্রমণে পলায়নপর পাকিস্তানী বর্বর জল্লাদদের হাতে ব্ৰাক্ষনবাড়িয়া নিহত হয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মুক্ত হওয়ার ঠিক আগের দিনে নৃশংস হত্যাযজ্ঞের শিকার তিনি। আগরতলা থেকে নভেম্বর মাসে তিনি তার গ্রাম সরাইলে ফিরে আসেন। সেখানকার অবস্থা সম্পর্কে মুক্তিবাহিনীকে প্রয়োজনীয় সংবাদ সরবরাহের উদ্দেশ্যে। রাতের বেলায় হিংস্র পাকিস্তানী পশুরা অতর্কিতে তার গ্রামের বাড়ী ঘিরে ফেলে। তার ছোট ভাই সৈয়দ আফজাল হোসেন (যিনি গেরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন) তাকেও আকবর হোসেনের সাথে গ্রেফতার করা হয়। ডিসেম্বর মাসের ৬ তারিখে (১৯৭১) যখন উভয়কে চোখ বাঁধা অবস্থায় হত্যা করার উদ্দেশ্যে বধ্যভূমিতে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আকবর হোসেনের ছোট ভাই আফজাল হোসেন করছি। আমার ভাইকে তোমরা হত্যা কর না। তিনি নির্দোষ। আমি ছেলেমানুষ। আমি অবিবাহিত। আমাকে মেরে ফেলা হলে কারো কোন ক্ষতি হবে না। আমার ভাই বিবাহিত তিনটি শিশুসন্তানের পিতা। নিষ্পাপ শিশুদেরকে এতিম করবে না। ওদেরকে দেখাশুনা করার মতন কেউ আর পৃথিবীতে নাই।” সে আকুল আবেদন নির্মুল হলো। গর্জে উঠলো মেশিনগান। অন্যান্য ৪০ জন বুদ্ধজীবীর সাথে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে দুই ভাই-এর নশ্বর দেহ। একই মায়ের দু'ছেলে একই মুহুর্তে জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত ঢেলে দিয়ে বাংলার শস্য শ্যামল বুককে আরো উর্বর করে দিয়ে গেল। আকবর হোসেন ঢাকা হাইকোর্ট বার এর এডভোকেট ছাড়াও কুমিল্লা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যকরী সংসদের সদস্য ও মগবাজার আওয়ামী লীগ ইউনিট এর ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন।