পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8の。 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ নাটোরের ছাতনীতে পাক বাহিনীর বর্বরতা পূর্বদেশ ৬ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ নাটোরের ছাতনী মাইলায়ের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে হাজার মাইলাইয়ের এক ছাতনী। বঙ্গবন্ধুর আহবানে সমগ্র বাংলার মানুষ যেমন সাড়া দিয়েছিল তেমনি ছাতনীর মানুষও সমস্বরে শ্লোগান দিয়েছিল: শোষকের মুখে লাথি মারো বাংলাদেশ স্বাধীন করো। আর এটাতেই সমগ্র বাংলার ধ্বংসের মতো ছাতনীর ধ্বংসও অনিবার্য হয়ে পড়ে। ”আমাকে তোমরা মেরোনা।” মৃত্যুমুখোযাত্রী ভাবশী গ্রামের মণি সরকার আর্তি করেছিলন হানাদার পাক বাহিনীর সৈন্যদের নিকট। হানাদার বাহিনী তাকে হত্যা করেছে। নির্মমভাবে গায়ের চামড়া উঠিয়ে হত্যা করেছে। ছাতনীর হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদশী যুবক আবুল কালাম কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে শোনাচ্ছিলেন ছাতনীর এ মর্মান্তদ কাহিনী । আবুল কালাম বললেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের দু’মাস পর্যন্ত আমরা এদিক-সেদিক পালিয়ে ভালই ছিলাম। হিন্দুদের আমরা পাহারা দিয়ে রাখতাম, কিন্তু এর মধ্যেও আমাদের অনেকবার লাঠিসোটা নিয়ে করবার জন্য এগিয়ে আসতে হয়। বিংশ শতকে হালাকুর বংশধররা তিনদিন পর সশস্ত্রে ছাতনী গ্রামকে আক্রমণ করতে আসে। গ্রামের মানুষ একত্রে খোদার নাম নিয়ে লাঠিসোটা নিয়ে দলে দলে তাদের তাড়া করে। হানাদার বাহিনী বিভ্রান্ত হয়েছে ঘটনা দেখে। তারা পিছু হটেছে। কিন্তু অবাঙ্গালী পাকিস্তানী অসামরিক নাগরিকদের দ্বিতীয় পিতা, ধর্মের কুলাঙ্গার জল্লাদ হাফেজ আব্দুর রহমান এ পরাজয়কে অপমান মনে করলো। তাই প্রতিশোধ নেবার ইচ্ছা প্রবল হলো তার। খুনের নেশাখোর এই জল্লাদ তাই পথ খুঁজতে চেষ্টা করেছে সর্বক্ষণ। আবার হেঁটেছে সেই পথে। বনবেলা ঘুরিয়ার মসজিদ থেকে টেনে বের করলো ১০৫ বছর বয়স্ক আওয়ামী লীগ সমর্থক বৃদ্ধ সৈয়দ আলী মুসীকে। ঘটনা ঘটলো ১৫ ই জ্যৈষ্ঠে। সৈয়দ আলী মুন্সীর লাশ দেখলো ছাতনীর মানুষ। ওরা কাঁদলো। এর পরের ঘটনা সুপরিকল্পিত ছাতনীর বর্তমানে সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ ৮২ বছরের নলীনিকান্ত বললেন ওরা রাতে এসে ছাতনী দিঘীর পাড়ে জমা হয়। রাত তখন প্রায় দুটো। সকাল পাঁচটার দিকে গাঁ ঘিরে নেয়। ঘরে ঘরে ঢুকে সবাইকে বের করে হাত পিছনে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছিল। বৃদ্ধের একমাত্র ছেলেকেও ওরা হত্যা করেছে। শিশুকেও হত্যা করতে ছাড়েনি। বৃদ্ধ বলছিলেন, ডাক্তার মনিরুদিনের তিনটি বিবাহিত যুবক ভাইকেও ওরা হত্যা করে গেল। রুদ্ধকণ্ঠে বৃদ্ধ নলিনি কান্ত বললেন, পিশাচরা মেয়েদের উপর অত্যাচার করল। লাখ লাখ অভিযোগ বর্বরদের এরুপ কাজের। এই গ্রামের আরেকজন যুবক আবুল কাশেম। অনেক বুদ্ধি খাটিয়ে বেঁচেছে সে। বললঃ যখন আমি বুকে ছুটে জমির হয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি। আবার দেখলাম একটি বৃদ্ধ এবং ক’জন লোক পিছনে হাত বাঁধা মরে পড়ে আছে। ওরা সংখ্যায় ছিলো কমপক্ষে ২৫০ জনের মতো । ৫০ জনের মতো পাক বাহিনীর সৈন্য। অবশিষ্টরা ছোরা হাতে অবাঙ্গলী