পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8Ֆ Գ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকাবাহিনীর আজাদ ৭ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ হত্যা, লুট ও নির্যাতন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২২ লক্ষাধিক টাকার সম্পত্তি ধ্বংস জল্লাদ বাহিনীর হত্যা, লুণ্ঠন ও পাশবিক অত্যাচারের নৃশংস কাহিনী রাজশাহী, ৫ই ফেব্রুয়ারী গত ন’মাস ধরে বর্বর পাকিস্তান বাহিনী বাংলাদেশে যে অবাধ হত্যালীলা চালিয়েছিল সে সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষকসহ ১৮ জন কর্মচারী নিহত হন। ঐ সময় জিনিসপত্রের দিক দিয়ে দখলদার বাহিনী ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২২ লক্ষ ৬৪ হাজার টাকার মত ক্ষতি করেছে। গত শুক্রবার জনৈক সাংবাদিকদের নিকট বিবরণ দানকালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার কতিপয় বিষয় উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী গত বছর এপ্রিল মাসের তৃতীয় সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে এবং জোহা হল, আব্দুল লতিফ হল, জিন্নাহ হল, আর্টস বিল্ডিং কেমিষ্ট্রি বিল্ডিং, মিলিটার সায়েন্স ডিপামেন্ট, এক্সপেরিমেন্টাল স্কুল বিল্ডিং এবং বহু ষ্টাফ কোয়ার্টারে তাদের ক্যাম্প স্থাপন করে। বর্বর হানাদার বাহিনী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করে এবং জোহা হল ও অন্যান্য হলসহ কতিপয় বিল্ডিংয়ের গুরুতর ক্ষতি সাধন করে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় বিল্ডিং হল এবং শিক্ষকদের কোয়ার্টার ও অন্যান্য কর্মচারীদের বাসা থেকে নানাবিধ জিনিসপত্র এবং গৃহস্থালীর মালপত্র লুট করে। এমনকি লাইব্রেরী সমূহের পুস্তকাদি এবং ল্যাবরেটরি সমূহের যন্ত্রপাতিও বাদ যায়নি। উক্ত সাংবাদিক সংখ্যাতত্ত্ব বিভাগের প্রধান ড: হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের প্রধান ও বাংলাদেশ প্লানিং কমিশনের নবনিযুক্ত সদস্য মোশাররফ হোসেন, বাংলা বিভাগের রীডার ড: আবু হেনা মোস্তফা কামাল এবং অন্যান্য কতিপয় শিক্ষক ও কর্মচারীর সাথে সাক্ষাৎ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বীভৎস অত্যাচারের কাহিনী সংগ্রহ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষককে রাতের আধারে তাঁদের বাসা থেকে পাকড়াও করে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। এরা হচ্ছেন-ম্যাথমেটিক্সের এসোসিয়েট প্রফেসর জনাব হাবিবুর রহমান, ভাষা সাহিত্যের এসোসিয়েট প্রফেসর শ্রী সুখরঞ্জন সমাদার এবং মনস্তত্ত্ব বিভাগের ডেমনেষ্ট্রেটর মীর আব্দুল কাইয়ুম। গত ১৪ই, ১৫ই এপ্রিল এবং ২৫শে নভেম্বর তারিখে তাদের বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ছাড়া ১৫ জন নিম্ন পর্যায়ের কর্মচারী শেখ এমাজুদ্দীন (ষ্টেনোগ্রাফার), সাইফুল ইসলাম (ইউডি এসিষ্ট্যান্ট), শফিকুর রহমান (ছুতার), কলিমুদ্দীন (ওয়ার্কস এসিষ্ট্যান্ট) আবদুল আলী (ড্রাইবার), আব্দুল মজিদ, মোহাম্মদ ইউসুফ (সাইকেল পিওন), মোহাম্মদ আফজাল (গার্ড), আব্দুর রাজ্জাক (গার্ড) আব্দুল ওয়াহার (আদালী পিওন), কোরবান আলী (বেয়ারা), আবদুল মালেক (বেয়ারা), নুরু মিয়া (গার্ড), ওয়াজেদ ইলী (পিওন), এবং মোহন লালকে তারা হত্যা করে। তারা সংখ্যতত্ত্ব বিভাগের লেকচারার কাজী সালেহ, ম্যথমেটিক্সের লেকচারার জনাব মুজিবুর রহমান এবং ড: আবু হেনা মোস্তফা কামালের উপর বর্বরোচিত অত্যাচর করে। কাজী সালেহ আহমদ এবং মুজিবুর রহমানকে বন্দী শিবীরে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘ চার মাস ধরে তাদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালায়। তাদের অমানুষিক অত্যাচারের ফলে জনাব মুজিবুর রহমানের পুরুষাঙ্গ দিয়ে রক্তপাত হতে থাকে। ড: আবু হেনা