পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8〉b বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ নৃশংসতার আরেক স্বাক্ষর আজাদ ৮ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ ভারতেশ্বরী হোমস (নজস্ব নিবন্ধ) একাত্তরের মে মাসে যখন জল্লাদ বাহিনী আক্রমণ করে তখন তাদের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের বহি:প্রকাশ ঘটেছিল। বাংলাদেশে গণহত্যার কাপালিক দলের অন্যতম জল্লাদ ক্যাপ্টেন আয়ুব হোমসে ঢুকেই তীব্র ঘৃনা ভরে তাচ্ছিল্যের সাথে বলেছিলো এটা হিন্দু তৈরীর কারখানা। অথচ জাতি ধর্মবর্ণের এখানে কোন প্রশ্ন নেই। জাতি ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে এখানে সবাই জ্ঞান অর্জন করতে পারে। সে বলেছিলো এ কারণে যেহেতু সংখ্যালঘু তথা হিন্দুদের সম্পর্কে তারা এলাজিক, তা ছাড়া ২৫ শে মার্চ রাতে যখন তাদেরকে হত্যাযজ্ঞে পাঠানো হয়, তখন হত্যাযজ্ঞের পাণ্ডা কুখ্যাত টিক্কা খান বলেছিলো শেখ মুজিবের নেতৃত্বে এ দেশের সব মানুষ হিন্দু হয়ে গেছে অতএব তাদেরকে শায়েস্তা করতে হবে, মুসলমান বানাতে হবে। মানবতা বিবর্জিত এ সব পাকিস্তানীরা তার স্বাক্ষর রেখে গেছে বাংলাদেশের সর্বত্র। বৌদ্ধদের জন্য। পাকিস্তানে থাকতে হলে সাবাইকে মুসলমান হতে হবে। এক পর্যায়ে হোমসের ছাত্রীদের সে নামাজের সুরাহ কেরাত জিজ্ঞাসা করে । স্বাভাবিকভাবেই হিন্দুরা তার জবাব দিতে পারেনি। আয়ুব তখনও রাগে থর থর করে কাঁপছিলো। তার মুখ থেকে মদের গন্ধ বেরিয়ে আসছিল । বলছিল, সবাইকে নামাজের সুরাহ কেরাত শেখাতে হবে। চোখে কাজল আর কপালে টিপ দেয়া চলবে না। আর তার দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল হোমসের ভাইস প্রিন্সিপাল সি সালমা রহমানেরা উপর। আয়ুবের সাহায্যকারীর স্থানীয় জামাতে ইসলামের কুখ্যাত পাণ্ডা মওলানা অদুদের জনৈক ছেলে কাকে বলেছিল, ”এদেরকে শায়েস্তা করতে হবে, ইসলামকে বাঁচাতে হলে এসব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফলতে হবে।” প্রিন্সিপাল মিসেস মুৎসুদীকে শাসিয়ে বলেছিল, তোমরা হিন্দু, তোমরা ভারতের চর, আওয়ামী লীগের সমর্থক।” দিয়েছে, লাইন করে মেশিনগান দিয়ে শত শত বাঙ্গালীকে হত্যা করছে। বাড়ীঘর লুটপাট করেছে। পশুরা হোমসের সকলকে শাসিয়েছে। ধমকিয়েছে। ভয় দেখিয়েছি। যাওয়ার পথে হোমসের আর হাসপাতালের ক’জন দারোয়ানকে হত্যা করে গেছে।