পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

888 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ মানিকগঞ্জের একটি বধ্যভূমি সাটুরিয়া হাট দৈনিক বাংলা ১৬ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ মানিকগঞ্জের বধ্যভূমি সাটুরিয়া হাট সংবাদদাতা প্রেরিত ॥ মানিকগঞ্জঃ ১২ই ফেব্রুয়ারী -মানিকগঞ্জ মহকুমার সাটুরিয়া থানায় একটা বধ্যভূমির সন্ধান পাওয়া গেছে। সাটুরিয়া হাটের নিকট মোঃ মনোয়ার হোসেন নামক জনৈক ব্যক্তির পরিত্যক্ত বাড়ীর ভিটা খনন করে বহু লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত লাশগুলো থেকে পাক পশুসৈন্যদের মর্মান্তিক নৃশংসতার স্বাক্ষর পাওয়া গেছে। লাশগুলোর হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা। চোখ মুখ কাপড় দিয়ে জড়ানো মুখের ভিতর কাপড় দেয়া হয়েছে। প্রত্যেকটি লাশ গলা কাটা অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ছাড়া অনেকগুলো মাথার খুলি ও হাড় পাওয়া গেছে। স্থানীয় দালালদের সহযোগিতায় পাক সৈন্য শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। মেয়েদের ধর্ষণ করেছে এবং লাখো লাখো টাকা লুট করে নিয়েছে। গত নয় মাসে এখানে বানিয়াটি গ্রাম থেকে হরিদাস সাহা ৫৫, অতুল সাহা ৪৫, নিতাই চন্দ্র সাহা ৩০, রাধুঘোষ, আওলাদ হোসেন, গাঙ্গুটিয়া গ্রাম থেকে সুধির রায়, কালু রায়, ডাঃ বিজয় সাহা, মৃণালকান্তি থেকে যথীন্দ্র কর্মকার, নয়াপাড়া থেকে শ্যাম সাহা, হাজিপুর থেকে হযরতকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। হানাদারদের হাতে সরকারী ডাক্তার নরেন্দ্র ঘোষও রেহাই পাননি। চর সাটুরিয়ার নারায়নবাবুর স্ত্রী আভারাণী ভট্টাচার্য ৩৫-কে পশুরা ধর্ষন করে হত্যা করে। যতীন কর্মকারের ১৫ বৎসরের নাতীকে চোখ উপড়ে ফেলে হত্যা করে। এমনি করে ওরা কতগুলো হতভাগ্য মানুষকে এখানে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। তার সঠিক পরিসংখ্যান হয়তো কোনদিনও পাওয়া যাবে না। তবে ঐ হানাদার পশুদের অত্যাচারের এক রাশ বিভীষিকাময় স্মৃতি মানব সভ্যতার দূরপনেয় কলংক হয়ে থাকবে।