পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৭৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8(*X বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড ভৈরবের হত্যাকাণ্ড দৈনিক বাংলা ২৪ ফেব্রুয়ারী, ১৯৭২ ভৈরবে একদিনেই ৪শ লোককে গুলি করা হয়েছে ৷ নিজস্ব সংবাদদাতা প্রেরিত ॥ ভৈরব, ১৯শে ফেব্রুয়ারী- ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত এ ৯ মাসে বর্বর পাকবাহিনীর দসু্যরা বাংলাদেশের অন্যতম নদী বন্দর ভৈরবে ত্রাস এবং বিভিমীকার রাজত্ব চালিয়েছিল। হানাদাররা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, ভৈরব এবং আশুগঞ্জ এলাকার শত শত মাকে করেছে বিধবা, সন্তানহারা অনাথ, আবার অনেক পিতাকে করেছে স্ত্রীহারা, সন্তানহারা। গত ১৫ই এপ্রিল পাকবাহিনীর ছত্রী সেনারা ভৈরবের বিভিন্ন এলাকায় প্রায় চারশত নিরপরাধ লোককে গুলি করে হত্যা করেছে। ঐ দিন ইব্রাহিমপুরের আলগড়ার মাঠেই ২৫০ জন লোককে হত্যা করেছে। এছাড়া ভৈরব ব্রীজের কাছে রেললাইনের উপর দাঁড় করিয়ে পচিশ জনকে গুলি করে মেরেছে। রহমানকে, ধরে নিয়েছে ভৈরব পৌরসভার সহসভাপতি মসলন্দ আলীকে এবং ভৈরব ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজু হাফিজউদ্দিন মিয়াকে। সেলিম, নীরব সমাজকর্মী সাত্তার, পথের ভিখারী আওয়াল, এবং মুজিব বাহিনীর তরুণ যোদ্ধা ফরহাদ আলী, গত মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের দিকে বর্বর মেজর ইফতেখার বাজিতপুর এবং নিকলী থাকার প্রায় দেড়শত লোককে ধরে এনে তাদের মধ্য থেকে প্রায় ৩৫ জন স্ত্রীলোকের উপর পাশবিক অত্যাচার চালায় এবং বাকী লোকদের আশুগঞ্জের মেঘনার চরে গুলি করে হত্যা করে। গত ১৫ই এপ্রিল থেকে ২২শে এপ্রিল পর্যন্ত রোড বলতে গেলে বন্দরের সর্বত্র আগুন ধরিয়ে দেয়। ফলে কোটি কোটি টাকার মালসহ শত শত গোলাগুদাম এবং দালানকোঠা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ভৈরব বাজার এখন সম্পূর্ণ ধ্বংস্তুপে পরিণত হয়েছে।