পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৪৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৪৬২ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ নারকীয় তাণ্ডবের আরেক লীলাভূমি দৈনিক বাংলা ২৮ মার্চ, ১৯৭২ নারকীয় তাণ্ডবের আরেক লীলাভূমি গোপালগঞ্জ ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে আজো ছড়িয়ে আছে চুড়ি, শাড়ী আর অসংখ্য কংকাল ॥ সংবাদদাতা প্রেরিত ॥ গোপালগঞ্জ, ১৬ই মার্চ - গোপালগঞ্জ সিও ডেভেলপমেন্ট অফিস। পাকিস্তানী সেনাদের একটা শক্ত ঘাঁটি। এ ঘাঁটির নায়ক ক্যাপ্টেন ফয়েজ মোহাম্মদ কালান্তরে অন্যতম নায়ক ক্যাপ্টেন সেলিম। বাঙ্গালীর ংগ্রামী লহুতে হাত রঞ্জিত করেছে এরা। পাক জল্লাদেরা গোপালগঞ্জের এইস্থানে কসাইখানা তৈরী করেছিল। কসাইয়ের অঙ্গনে মাহবুব-উররহমান চৌধুরী, গোলজার চৌধুরী প্রাণ দিয়েছে ওদের হাতে। কত যে মাহবুব-উর-রহমান চৌধুরী এখানে দেশমাতৃকার মুক্তিসংগ্রামে প্রাণ দিয়েছে তার হিসেব নেই। জল্লাদের কাকে কোথায় হত্যা করেছে সব ঘটনা মানুষ জানতে পারেনি। ৬ই ডিসেম্বর, ১৯৭১ সাল। রাতের অন্ধকারে যেমন পাক জল্লাদেরা ২৫শে মার্চ ১৯৭১ সালে হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ঠিক তেমনি এ রাতে মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীর যৌথ আঘাতে দিশেহারা হয়ে গোপালগঞ্জের ক্যাম্প ছেড়ে লোক চক্ষুর অন্তরালে সরে পড়ে। অসংখ্য মানুষের মৃত্যুকেন্দ্র মিলিটারী ক্যাম্পে মানুষ যাত্রা করেছে। কেউ গিয়েছে প্রিয়জনদের স্মৃতি চিহ্নের অন্বেষণে, কেউ গিয়েছে শহীদ সংখ্যা নিরূপণ করতে। স্মৃতিচিহ্ন অনেকে পেয়েছেন। ক্যাপ্টেন ফয়েজ ও সেলিমের কক্ষে মেয়েদের হাতের চুড়ির স্তুপ, চেনা শাড়ী অথবা ব্লাউজ অনেকেই চোখের পানি মুছতে মুছতে নিয়ে এসেছেন। কিন্তু শহীদের সংখ্যা কেউ নিরূপণ করতে পারেননি। ক্যাম্পের সামনে ইটের স্তুপে খুলি, হাড়, ক্যাম্পের সামনে খোলা জায়গায়ও খুলি হাড়ের মেলা এবং ক্যাম্পের সামনে নদীর ভিতর জেলেদের জালে এখনও জড়িয়ে পড়ে মানুষের মাথার খুলি অথবা মৃত মানুষের কংকাল। কি করে এর হিসেব মিলবে ?