Տ(չ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড আমাদের কোয়ার্টারে বসে মেয়েদের আর্ত চিৎকার শুনে অকস্মাৎ সবাই ঘুম থেকে ছেলেমেয়ে সহ জেগে উঠতাম। সেই ভয়াল ও ভয়ঙ্কর চিৎকারে কান্নার রোল ভেসে আসতো “বাঁচাও, আমাদের বাঁচাও, তোমাদের পায়ে পড়ি, আমাদের বাঁচাও, পানি দাও, এক ফোটা পানি দাও, পানি, পানি।” মিলিটারী ট্রাক ও ভ্যানে প্রতিদিন পাঞ্জাবী সেনারা রাজধানীর বিভিন্ন জনপদ, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা থেকে নিরীহ বাঙ্গালী যুবক ছেলেদের চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে হেডকোয়ার্টারে অফিসের কক্ষে কক্ষেজমায়েত করে অকথ্য অত্যাচার চালাতো। হেড কোয়াটার অফিসের উপর তালায় আমাদের প্রবেশ করা একেবারে নিষিদ্ধ ছিল। দিনের বেলায় পুলিশ লাইনে প্যারেডের আওয়াজের জন্য উপরতলা থেকে নির্যাতিত বন্দীদের কোন আর্তনাদ আমরা শুনতে পেতাম না। সন্ধ্যার পর আমরা আমাদের নির্দিষ্ট কোয়ার্টার থেকে তাদের আর্তনাদ শুনতে পেতাম। সন্ধ্যার পর পাক সেনারা বিভিন্ন প্রকারের বন্দীদের উপর অত্যাচার চারিয়ে যেত। আর লোহার রডের উপর ঝুলন্ত বালিকা, যুবতী নারী ও রূপসী রমণীদের উপর চলতো অবিরাম ধর্ষণ, নির্মম অত্যাচার। বন্দীদের হাহাকারে আমরা অনেক সময় একবারে দিশাহারা হয়ে পড়তাম, অনেক সময় প্রতিবাদ করতে চাইতাম। কিন্তু ওদের শক্তির মোকাবিলায় আমাদের কিছুই করার ছিল না, আমরা কিছুই করি নাই, করতে পারি নাই। এভাবে প্রতিদিন মুক্তি হায়’ বলে যে সব নিরীহ বাঙ্গালী ছেলেদের চোখ বেঁধে পুলিশ লাইনে এনে হেড কোয়ার্টার অফিসে জমায়েত করা হত রাতের শেষে পরের দিন সকালে আর এ সকল বন্দীদের দেখা যেত না এবং সে স্থানে নতুন বন্দীদের এনে রাখা হতো। স্বাক্ষর/খলিলুর রহমান ఎ-స్క్రి-ఫి H8
পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫২
অবয়ব