পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(չ ՖԳ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ শহীদ শামসুল হক ও নুরুল হক | স্বাধীনতা স্মারকসংখ্যা বাংলাদেশ কৃষি ১৯৭২ বিশ্ববিদ্যালয় বার্তা শহীদ শামসুল হক তালুকদার জীবনের উজ্জ্বলতা নিয়ে কুমিল্লা জেলার ছোট সুন্দর গ্রাম থেকে এসেছিল সে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে। শামসুল হককে সকল ছেলেই শামসু ভাই বলে ডাকত। তিনি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন বিশিষ্ট ছাত্রনেতা, ছাত্র সংসদের সাবেক সম্পাদক এবং ময়মনসিংহের ছাত্র নেতৃবৃন্দের অন্যতম। বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত হয় স্বাধীনতা আন্দোলন মার্চের প্রথম দিন থেকেই। প্রত্যক্ষ সংগ্রামের জন্য ২৫শে মার্চের (১৯৭১) পর শামসুল তাঁর নিজের গ্রাম ছোট সুন্দরে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য দিনরাত তিনি পরিশ্রম করে যুবকদের মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করতে উদ্বুদ্ধ করেন এবং অনেক তরুণ ছেলেকে ভারতে পাঠাতে সাহায্য করেন। প্রায় ৪ মাস তিনি এ ভাবে কাজ করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু রাজাকার ও বর্বর পাকসেনাদের চোখ এড়িয়ে ভারতে যাওয়া যখন কঠিন হয়ে ওঠে তখন তিনি তার এক আর্তীয়ের সহযোগিতায় তথাকথিত শান্তি কমিটির কার্ড প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধার জন্য জোগাড় করতে সক্ষম হন এবং এভাবে পাক সামরিক এলাকার মধ্যে দিয়ে নিয়মিত তাঁর ভর্তি করা যুবকগণ ভারতে যেতে সক্ষম হতো। কিন্তু এক পর্যায়ে এ-বিষয়টি নিকটবর্তী স্থান হাজীগঞ্জের রাজাকার ও দালালগণ জানতে পারে। শামসুল হক নিজেও বিপদের কথা বুঝতে পেরে কুমিল্লা চলে যান। অবস্থা যখন খুব অসুবিধাজনক হয়ে পড়ে তখন তিনি নিজেই ভারতে চলে যাওয়ার মনস্থ করেন এবং যাবার সময় মাকে দেখতে বাড়ী আসেন। সেদিন ছিল আগষ্ট মাসের ১০ তারিখ। মার কাছে বিদায় নিয়ে চলে যাবেন এমন সময় বাড়ীর চারদিক দুশমন রাজাকার ও শত্রুসৈন্য ঘিরে ফেলে। শামসু বের হতে পারেননি। তাঁকে দুশমনরা বাড়ীর সিড়ির আড়াল থেকে ধরে নিয়ে আসে। তাঁর মত আরও ১৬ জনকে অন্যান্য বাড়ী থেকে ধরে নিকটবর্তী বাজারে এনে প্রত্যেককে খুঁটির সঙ্গে হাত-পা বেঁধে একে একে গুলি করে হত্যা করে। ছোট সুন্দর গ্রামের মাটি রঞ্জিত হয় দেশ-প্রেমিকদের রক্তে। দেশ গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন শামসুল হক শত কোটি শামসুল হক তাঁর ও স্বপ্ন সফল করবার জন্য এগিয়ে আসবে। শহীদের মৃত্যু নেই, নেই মৃত্যু তাঁর আদর্শের। শহীদ নূরুল হক ছাত্রদের অতি প্রিয় একটি নাম নুরু। মে মাসের ২০ তারিখে (১৯৭১) বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ডঃ আমির হুসেন তালুকদারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন তিনি। ডঃ তালুকদারের পরামর্শ নিয়ে চলে যান তিনি নিজ যাচ্ছিলেন নুরু।