পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৫৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○8br বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড করে এবং সামনে যাকে পায় তাকেই নির্বিচারে গুলী করে হত্যা করে। পাক সৈন্য আসার পূর্বে বেশীর ভাগ লোক শহর ছেড়ে চলে যায়। যারা নিঃস্ব দরিদ্র-একমাত্র তারাই শহরে ছিল। মনে করেছিল পাক সৈন্য তাদের কিছু ক্ষতি করবে না। কিন্তু বর্বর পাক সৈন্যের নিকট ধনী-দরিদ্রের বিচার নেই। রফিককে গুলী করে বর্বররা তয়েবের মার দিকে বন্দুক তাক করে। তাই দেখে তয়েব কেদে ওঠে এবং সঙ্গে সঙ্গে বন্দুকের গুলীতে তার মা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এই দেখে তয়েব দৌড়িয়ে নদীর ঘাটের দিকে পালায়। সেখানে অনেক লোক নদী পার হয়ে ভারত সীমান্তের দিকে পালাচ্ছে। তয়েব তাদের সঙ্গে ভিড়ে পড়ে। তার জীবনের মর্মান্তিক ঘটনা সকলকে স্পর্শ করে। তারা তয়েবকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় এক সপ্তাহ নানা গ্রাম ঘুরে ইসলামপুরে আসেন এবং জয় বাংলা সংগ্রাম সংহতি কমিটি পরিচালিত ক্যাম্পে আশ্রয় পান। এখানে ছেলেরা তয়েবের নাম দিয়েছেন মন্টু। মন্টুর হৃদয়বিদারক কাহিনী এখন ক্যাম্পের সকলের মুখে। মন্টুও ক্যাম্পবাসী ও কর্মীদের বড় প্রিয়, বড় আপনজন হয়ে উঠেছে। দেড় লক্ষ শরণার্থী বাংলাদেশ থেকে ইসলামপুর মহকুমায় দেড় লক্ষের উপর উদ্বাস্তুর আগমন হয়েছে। জয়বাংলা সংগ্রাম সংহতি কমিটি অনেক উদ্বাস্তুকে বিনামূল্যে রান্না করা খাদ্য সরবরাহ করছেন। এই ক্যাম্পের বেশীর ভাগ লোক এসেছেন বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও অঞ্চল থেকে। এদের নিকট পাক বাহিনীর বহু অকথ্য অত্যাচারের ঘটনা জানা গেল। ত্রিপুরাতেই ৪ লক্ষ উদ্বাস্তু আগরতলা, ৬ই মে- বাংলাদেশ থেকে প্রায় চার লক্ষ উদ্বাস্তু সীমান্ত পেরিয়ে ত্রিপুরায় এসে হাজির হয়েছে। ত্রিপুরার নিজস্ব লোকসংখ্যা হোল ১৫ লক্ষ। সাব্রুম মহকুমায় এসেছে ১ লক্ষ ৩৭ হাজার উদ্বাস্তু। এই মহকুমার নিজস্ব লোকসংখ্যা হোল মাত্র ৬০ হাজার। সরকারী সূত্রে এই খবর পাওয়া গেছে। একটি বিবৃতিতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্ৰী শ্ৰী শচীন্দ্রলাল সিংহ ত্রিপুরায় আগত উদ্বাস্তুদের সাহায্যে এগিয়ে আসার জন্য রাজ্য সরকারগুলিকে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, উদ্বাস্তুদের জন্য কেন্দ্রের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও সাহায্য পাওয়া যায় নি। করিমগঞ্জ থেকে প্রাপ্ত রিপোর্টে প্রকাশ, প্রায় ৫০ হাজার উদ্বাস্তু গত এক মাসে সীমান্ত পেরিয়ে করিমগঞ্জে এসে হাজির হয়েছে। এদের মধ্যে ১৬ হাজার উদ্বাস্তুকে করিমগঞ্জ মহকুমার মোট ২৭টি শিবিরে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন প্রায় চার হাজার উদ্বাস্তু করিমগঞ্জ সীমান্তে এসে হাজির হচ্ছে। করিমগঞ্জে বাংলাদেশ ত্রাণ কমিটির পক্ষ থেকে আসামের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে একটি স্মারকলিপি পেশ করে বলা হয়েছে যে, সীমান্তের ওপার থেকে আগত উদ্বাস্তুদের সম্পর্কে উপযুক্ত খোঁজখবর করার পর ভারতে বসবাসের অধিকার যেন দেওয়া হয়। অন্যথায় সমাজবিরোধীরা এই সুযোগে ভারতে এসে হাজির হতে পারে। ন্যাশনাল হেরাল্ড ২২ মে, ১৯৭১ PROFF OF GENOCIDE AT AGARTALA HOSPITAL New Delhi, May 20-The general hospital in Agartala presented a picture of the inhuman atrocities of the Pakistan Army on the innocent East Bengalis, writes a UNI correspondent after a visit to the border areas in the eastern region.