পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (অষ্টম খণ্ড).pdf/৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

○br বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : অষ্টম খন্ড ৷৷ ২৯৷৷ শ্ৰী জ্ঞানেন্দ্রনাথ পোদার গ্রাম-জামুকী থানা- মির্জপুর জেলা- টাংগাইল ১৯৭১ সালের ১০ই নভেম্বর পাক বাহিনী আমাদের গ্রামে আসে। আমি পালাতে চেষ্টা করছি। এমন সময় একজন পাক দস্য আমাকে ডাকিয়ে তার সামনে হাজির করলো। আমাকে বলল, “চল বেটা আমাদের শিবিরে”। পাক শিবিরেনিয়ে পাকবাহিনীর গাড়ীতে করে আমাকে অন্য এক শিবিরে পাঠিয়ে দিল। শিবিরে তখন উত্তর দেই, আমাদের গ্রামে কোন মুক্তি বাহিনী নেই। এই কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে লাঠি দিয়ে বেদমভাবে প্রহার করলো। তারপর অন্য একজন রাজাকার এসে আমাকে বলে বেটা মালাউন হ্যায়। বেটাকে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়া দেখাচ্ছি। এই বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে বেতের লাঠি দিয়ে ভীষণভাবে প্রহার করলো। আমি তখন অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে রইলাম। তারপর আমার যখন জ্ঞান ফিরে এলো তখন আমাকে একটি নদীর ধারে নিয়ে গেল, আমি মনে করলাম আমার জীবনের শেষ লীলা এখানে বুঝি শেষ হবে। আমাকে প্রথমে মাটির উপর চিৎ করে শুইয়ে রাখল। কিছু পর একজন পাক দস্য এসে আমাকে ভীষণভাবে লাথি মারল এবং বেয়নেট দিয়ে আমাকে পেটের উপর আঘাত করলো। এই আঘাতে আমার জীবন শেষ হয়ে যায় যায়। তখন আমি কোন রকমে জল টেনে মাটির উপর ভর করে থাকি। কোন রকমে আমি সাঁতার কেটে নদীর ওপাড়ে যেয়ে আমার আঘাত স্থানে গেঞ্জি দিয়ে বেঁধে বহু কষ্ট করে নদীর জল হতে উঠে কোন রকমে আমার বাড়ীতে চলে আসি। বাড়ীতে ডাক্তার এসে ভালো করে ব্যাণ্ডেজ করে দিলো। আজ পর্যন্ত আমার ক্ষতস্থানে তার চিহ্ন রয়েছে। স্বাক্ষর/শ্ৰী জ্ঞানেন্দ্রনাথ পোদ্দার