পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/২৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

260 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড ংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে অংশগ্রহণের | বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকার | ১৪ মে, ১৯৭১ জন্য বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকার আহবান মুখপত্র ‘বাংলাদেশ পত্র’ বাংলাদেশ পত্র কলেজষ্টেশান, টেক্সাস প্রথম সংখ্যা চৌদ্দই মে, ১৯৭১ স্বাধীনতার ডাকে বাংলাদেশে আজ রক্তগঙ্গা বইছে। বাঙ্গালীর রক্তে হোলী খেলে পাঞ্জাবী দস্যদল পৈশাচিক আনন্দে মত্ত। আমাদেরই ভাইবোনেরা যখন অত্যাচারীর খড়গ রুখে দাঁড়াতে গিয়ে নির্বিচারে জীবন বিলিয়ে দিতে দ্বিধা করছে না, তখন মার্কিন দেশের বিলাসময় পরিবেশের মধ্যে থেকে দেশের জন্য আমরা কি করছি? স্বাধীনতা আমরা পাবই, এ ব্যাপারে দ্বিমতের কোন অবকাশ নেই। তবে এ আন্দোলনে আমরা আমাদের দেশবাসীকে কতটুকুই বা সাহায্য করছি? ছিন্নবস্ত্রে, অনাহারে ও অন্নাভাবে থেকেও বাংলাদেশের বীর জনতা স্বৈরাচারী সাম্রাজ্যবাদের বেয়নেট শাসনকেও ভূলুষ্ঠিত করেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের এই সংকটময় মুহুর্তে দেশবাসী আমাদের কাছে অনেক কিছু আশা করে। আজ আমাদের সামান্য আত্মত্যাগের ভয়ে ভীত হলে চলবে না। কৈ আমরা কি একটুকু আরাম-আয়েশ বিসর্জন দিতে পেরেছি? হাজারো মানুষের রক্তের ঋণে গড়া এই সংগ্রামের ডাকে আমরা এককভাবে সাড়া দিতে না পারলে উত্তরসূরীরা আমাদেরকে ক্ষমা করবে না। তাই আজ আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। আসুন, বাংলা মায়ের ডাকে সবাই একসাথে কাজ করে যাই। দলাদলি ও বিভেদ ভুলে গিয়ে মাত্র একটি লক্ষ্যে পৌঁছাবার জন্য আমাদেরকে আত্মোৎসর্গ করতে হবে। করণীয় আমাদের অনেক। প্রচারকার্যে দলবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। গণতন্ত্র ও স্বাধিকার আদায়ে বাংলাদেশের বীর জনতার মহান আদর্শ ও আত্মত্যাগের সংগ্রাম বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে হবে। প্রচারকার্যের এবং বাংলাদেশের দুর্গত মানবতার জন্য আর্থিক সাহায্যের একান্ত প্রয়োজন। এই মুহুর্তে আমাদের যথাসাধ্য সাহায্য নিয়ে এগিয়ে আসা উচিত। এই চরম সংকটকালে নির্বিকার হয়ে বসে থাকলে চলবে না। বিনা ত্যাগে স্বাধীনতার আকাঙ্খা করলে ভুল হবে। এ ভুল অমার্জনীয় অপরাধ। সংগ্রামহীন স্বাধীনতা লাভের নজীর ইতিহাসে নেই। লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে গড়া এই মুক্তির সংগ্রামকে আমরা ব্যর্থ হতে দেব না। বাংলার জয় হবেই। জয় বাংলা কলেজষ্টেশানঃ আমাদের কর্মসূচী গত নির্বাচনে অর্জিত গণতন্ত্রের অধিকার আদায়ের জন্য মার্চ মাসের প্রথম ভাগে শেখ মুজিবুর রহমান প্রদেশব্যাপী এক অসহযোগ আন্দোলন শুরু করেন। এই আন্দোলনকে বানচাল করে দেবার জন্য পাঞ্জাবী সৈন্যরা নির্বিচারে গণহত্যা আরম্ভ করে। এই ঘটনার প্রথম থেকেই আমরা কলেজষ্টেশানের বাঙ্গালী ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশের জন্য কাজ শুরু করি। প্রথমতঃ একটি সামরিক পরিষদ গঠন করা হয়। তারপর আজ (চৌদ্দই মে) মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের তিনজন সদস্য সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ সংগ্রামী ছাত্র ংস্থার