পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৫৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

537 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টির বাংলাদেশ কমিউনিষ্ট পার্টি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ কর্তব্য সম্পর্কে পার্টি সার্কলার পার্টি সার্কলার (পার্টি সভ্যকর্মী ও দরদীদের জন্য) মুক্তিযুদ্ধের নূতন অধ্যায় WG আমাদের করণীয় আট মাসের কঠোর ও রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পরে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ আজ সাফল্যের দ্বারে আসিয়া উপনীত হইয়াছে। যে নর-পিশাচের দল বাংলাদেশ লাখ লাখ নিরস্ত্র মানুষ হত্যা করিয়া, অগণিত অসহায় নারীর মান-সম্মান বিনষ্ট করিয়া এবং এক কোটি নিরপরাধ লোককে দেশ ছাড়া করিয়া বীরত্বের পরাকাষ্ঠা দেখাইয়াছিল তাহারা আজ মুক্তিবাহিনী ও মিত্র ভারতীয় যৌথ দুর্বার আক্রমণের সম্মুখে প্রাণভয়ে পলায়ন করিতেছে। বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকা ইতিমধ্যেই মুক্ত হইয়াছে এবং আশা করা যায় রাজধানী ঢাকাতে শীঘ্রই স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হইবে। ভারতের উপর আগ্রাসী আক্রমণ গ্রামে অগ্নিসংযোগ, লুঠতরাজ, নারীধর্ষণ প্রভৃতি বর্বর অত্যাচার চালাইয়া মুক্তিসংগ্রামকে রক্তের বন্যায় ডুবাইয়া দিতে চেষ্টা করিয়াছিল, কিন্তু তা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হইয়াছে। জনগণের ইয়াহিয়া-চক্রবিরোধী লৌহদৃঢ়, ঐক্য, দুর্ধর্ষ মুক্তিবাহিনীর বীরত্বপূর্ণ সংগ্রাম, আমাদের সংগ্রামের প্রতি ভারতের জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন, ভারত সরকারের সাহায্য এবং সোভিয়েত ইউনিয়নসহ সমাজতান্ত্রিক দেশসমূহ ও দুনিয়ার প্রগতিশীল জনগণের সহানুভুতির ফলে ইয়াহিয়া সরকারের চক্রান্ত প্রথম ধাপেই বানচাল হইয়া গিয়াছে। দুর্জয় মুক্তিবাহিনীর নিকট পর্যদুস্ত হইয়া আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ইয়াহিয়া থান পা-ভারতের মধ্যে যুদ্ধ হিসাবে চিত্রিত গত ৩রা ডিসেম্বর অতর্কিতে ভারতের উপর পাকিস্তানের বিমান আক্রমণ এবং ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের যুদ্ধ ঘোষণা ঐ ষড়যন্ত্রেরই অঙ্গ। ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এই আক্রমণ প্রকৃতপক্ষে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধেই আক্রমণ। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী বর্তমান অবস্থায় গত ৬ই ডিসেম্বর ভারত সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকারের স্বীকৃতি একটি সময়োচিত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমরা এ জন্য ভারতের জনগণও ভারত সরকারকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাইতেছে। ভারত কর্তৃক বাংলাদেশের স্বীকৃতি ফলে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সহযোগী ও চীনের ঐক্যবদ্ধভাবে পরিচালিত হওয়ার ভিত্তি রচিত হইয়াছে। ভারত সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ সরকারের স্বীকৃতিদানের পর আমাদের মুক্তিবাহিনী ও ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী একযোগে মিত্রবাহিনী হিসাবে সাধারণ শত্রু ইয়াহিয়া-চক্রের বিরুদ্ধে লড়াই করিতেছে। এই ম্মিলিত