পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্থ খণ্ড).pdf/৫৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

564 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিল : চতুর্থ খন্ড জাতীয় মুক্তিফ্রন্টের কর্মসূচী জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট | ..... Ջի Գ Տ জাতীয় মুক্তিফ্রন্টের কর্মসূচী যে নিম্নতম কর্মসূচীর ভিত্তিতে বর্তমানে জাতীয় মুক্তিফ্রন্ট গঠনের প্রচেষ্টা চালানো যাইতে পারে, তাহা श्ल8 (১) পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়াশীল শাসকগোষ্ঠীর দখলকারী সৈন্যবাহিনী সশস্ত্র সংগ্রামের দ্বারা পরাভূত ও বিতাড়িত করা, বাংলাদেশকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করা এবং সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য অর্জনের পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য বাংলাদেশকে স্বাধীন সার্বভৌম প্রজাতন্ত্রী রাষ্ট্র হিসাবে গড়িয়া তোলা। (২) এই রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বময় ও সার্বভৌম ক্ষমতা জনগণ দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিত্বমূলক আইন সভার হাতে ন্যস্ত করা, প্রাপ্তবয়স্কদের সার্বজনীন ভোটাধিকার ও যুক্তি নির্বাচন প্রথার ভিত্তিতে প্রত্যক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা। (৩) জনগণকে বাক স্বাধীনতা, ব্যক্তি স্বাধীনতা, রাজনৈতিক দল ও সংঘ গঠনের স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা প্রভৃতি মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করা, শ্রমিক-কৃষক ও অন্যান্য জনতা যাহাতে ঐসব অধিকার অবাধে ভোগ করিতে পারে তাহার ব্যবস্থা করা, সর্ববিধ দমনমূলক আইন রহিত করা, রাষ্ট্র পরিচালনার নীতিসমূহ নির্ধারণের ব্যাপারে জনসাধারণ যাহাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করিতে পারে তাহার পূর্ণ সুযোগ দেওয়া, নগর, শহর ও গ্রামে স্থানীয় ব্যাপারসমূহ পরিচালনার জন্য জনগণের নির্বাচিত স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানসমূহ স্থাপন করা এবং সরকারী শাসন পরিচালনার কার্যে এই সব প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা গ্রহণ করা। বিচার বিভাগকে শাসন বিভাগ হইতে পৃথক করা এবং কোন আইন বিধিসম্মত কিনা তাহা নির্ধারণের ভার বিচারালয়ের উপর অর্পণ করা। (৪) রাষ্ট্রের চোখে জাতি-ধর্ম, স্ত্রী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিকের সমান অধিকার স্বীকার করা এবং ধর্মগত ও মতাদর্শগত কারণে কাহারও প্রতি কোন বৈষম্যমূলক আচরণ না করা। (৫) প্রত্যেক নাগরিকের নিজ বিবেক-বুদ্ধি অনুযায়ী মতামত ও ধর্মীয় বিশ্বাস পোষণ এবং ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের অধিকার নিশ্চিত করা। কাহারও ধর্ম বিশ্বাসে হস্তক্ষেপ না করা। সকল প্রকার সাম্প্রদায়িক প্রচারণা বেআইনী করা। সকল প্রকার সাম্প্রদায়িক দল ও শত্রদের দালালী করিয়াছে এমন সব দলকে বেআইনী করা। (৬) পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী ও বিদেশী সাম্রাজ্যবাদের দ্বারা শিক্ষিত, তাহাদের প্রতি অনুরক্ত ও সম্পর্কিত সকল স্তরের সমস্ত প্রকার কর্মচারীদের রাষ্ট্ৰীয় প্রশাসনিকযন্ত্র হইতে অপসারণ করা। আমলা, পুলিশ প্রভৃতির ক্ষমতা সীমাবদ্ধ করা। (৭) বাংলাদেশের দেশরক্ষা বাহিনীকে একটি প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও গণস্বার্থকারী সৈন্যবাহিনী হিসাবে গড়িয়া তোলা। (৮) বাংলাদেশের উপজাতির জনগণের রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক তথা সামগ্রিক বিকাশের জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থাসমূহ গ্রহণ করা।