পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/১০০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

970 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড ঢাকা মিলিটারী গ্যারিসন বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল করেছে। অবশ্য তাতে ব্যাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে পঃ পাকিস্তানী কর্তৃপক্ষের তিক্ততা বৃদ্ধি পাবে। আজ পুনরায় সামরিক মুখপাত্র বলেন, ভারতীয় গোলন্দাজরা অসামরিক লোকজনের ওপর গোলাবর্ষণ করছে না। বগুড়ার পতন বগুড়ার পতনের পর চারজন পাক অফিসার বন্দী হয়েছে। তবে একজন পলায়ন করতে সক্ষম হয়। পাক সেনারা রংপুর সেক্টরে ক্যান্টনমেন্টকে ঘিরে এখনও যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের বন্দর জুলছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চল কম্যান্ডের যুদ্ধ জাহাজ এদিন পুনরায় চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরের ওপর বোমা ও রকেট নিক্ষেপ করায় বন্দরটি জুলতে দেখা গেছে বলে খবর এসেছে। এই দুই বন্দরের ওপর চাপ অব্যাহত রাখার জন্যই এই আক্রমণ চালানো হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া শত্রদের অনেক ব্যারাক, হেড কোয়ার্টার ও ট্রানজিট ক্যাম্পের ওপর আক্রমণ করা হয়েছিল। ভারতীয় নৌবাহিনীর দপ্তরখানা জানিয়েছেনঃ এই আক্রমণের ঘটনার পরে একটি জাহাজও বন্দর ছাড়তে পারেনি। চট্টগনা বন্দর এখন ভারতীয় সেনাবাহিনীর চলার পথে মাত্র চার-পাঁচ মাইলের মধ্যে। চট্টগ্রামের দিকে সাঁড়াশী অভিযান চালানো হয়েছে। তাছাড়া নৌবাহিনী শত্রসেনাদের সব জলপথে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দিয়েছিল। পূর্বাঞ্চলের নৌবাহিনী যখন এই যুদ্ধ চালাচ্ছিল, তখন ফ্ল্যাগসীপ বিমানের সাহায্যে আক্রমণের পুরোভাগে ছিল। তারা অপূর্ব কাজ করেছে বলে দাবী করা হয়েছে। নৌবাহিনীর কোন ক্ষতি হয়নি। শ্রীহট্টের অগ্রগতি শ্রীহট্ট শহর থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে এক গ্রামে অবস্থিত বাংলাদেশের পেট্রোলিয়াম পরিশোধনাগারটি অক্ষত অবস্থায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর দখল করেছেন। গতকাল বিকেলে যখন এটি দখল করা হয়, সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তখন সেখানে বারো হাজার গ্যালন পেট্রেলিয়াম ও পর্যান্ত পরিমাণে গ্যাস ছিল। এই পরিশোধনাগার থেকে কুশিয়ারা নদীর তীরে অবস্থিত সার কারখানায়ও গ্যাস পাঠানো হতো। উক্ত মুখপাত্র আরো বলেন, পাক সেনাদের তিনটি বাহিনী ঐ পরিশোধনাগারটি রক্ষা করেছিল। কিন্তু ভারতীয় জোয়ান ও মুক্তিবাহিনী সমবেতভাবে তা আক্রমণ করেন; শত্রপক্ষের অনেক লোক হতাহত হয়। ১৮ জন পাক সেনার মৃতদেহ এখন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। শত্ররা দুটি চীনের ভারী মেশিনগান, চারটি ভারী গাড়ী, কিছুসংখ্যক গোলা ও অন্যান্য অস্ত্র রসদ ফেলে গেছে। তিনজন আহত শত্রসেনাকে বন্দী করা হয়েছে। শত্ররা এই কারখানাটি ভেঙ্গে দেবার চেষ্টা করেছিল; কিন্তু সার্থক হয়নি। খুলনা রণাঙ্গন এই রণাঙ্গনে শত্রসেনাদের হতাহতের সংখ্যা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। কারণ, তারা মরণপণ করে লড়ছে। পদার ওপরের হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিকটে ভারতীয় জওয়ানরা শত্রদের পাঁচটি বন্দুক, একটি ট্যাঙ্ক, ৮৫টি গাড়ী এবং অন্যান্য অস্ত্রশস্ত্র পেয়েছেন। ১৭৫টি পাক ট্যাঙ্ক সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেনঃ গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন রণাঙ্গনে ১৭৫টি পাক ট্যাঙ্ক ও ৮৩টি বিমান ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এর মধ্যে ১৮টি ট্যাঙ্ক অক্ষত আছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর একদিনের যুদ্ধে নৌবাহিনীর একটি বিমান সমেত ৪১টি বিমান ও ৬১টি ট্যাঙ্ক খোয়া গেছে।