পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/১০০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

977 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম উৎস তারিখ ৪১০। ঢাকার ভিতরে ভারতীয় কামান আনন্দবাজার পত্রিকা ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ “নিরাপদ এলাকা’ ও খালি বাড়িতে পাক সৈন্যের ঘাঁটি ঢাকার ভিতরে ভারতীয় কামান গোলা দাগছে ভারতীয় পদাতিক সৈন্যেরা ঢাকার দুই কিলোমিটারের মধ্যে এসে পড়েছেন। শহরের মহল্লায় মহল্লায় তাঁরা বিভিন্ন সামরিক লক্ষ্যবস্তত্তর উপর কামান দেগে চলেছেন। ওদিকে মিত্রবাহিনী চট্টগ্রাম থেকে আসছেন মাত্র পাঁচ কিলোমিটার দূরে। মেঘনার দক্ষিণ তীরে দাউদকান্দি থেকে যে সব পদাতিক বাহিনী আসছিলেন, তাঁরা পথের সমস্ত নদীর বাধাই অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছেন। এখন চর্তুদিক থেকেই পদাতিক সৈন্যরা নগরীকে নাগপাশের মত এটে ধরছেন। বুধবার কলকাতায় একজন সামরিক মুখপাত্র আরও জানান, পাকিস্তানী সৈন্যরা আমাদের গোলন্দাজ বাহিনীর মরটারের গোলার জবাব দিচ্ছে। খবর পাওয়া গিয়েছে, ঢাকার যে সব অসামরিক লোকজন বাড়িঘর ফেলে অন্যত্র চলে গিয়েছেন, শত্রুসৈন্যরা তাঁদের পরিত্যক্ত বাড়িঘরে ঢুকে ঘাঁটি গেড়েছে। একজন বিদেশী সংবাদদাতার প্রশ্নের জবাবে মুখপত্র বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী এসব বাড়িকে সামরিক লক্ষ্য বলে গণ্য করেছেন। নয়াদিল্লীতে জনৈক সরকারি মুখপাত্র বলেছেন, ঢাকায় দখলদার বাহিনী আত্মরক্ষার এক অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছে।পাক জঙ্গীশাহী তাদের সেনাদের ঢাকার নিরপেক্ষ অঞ্চল ও অসামরিক এলাকায় জড়ো করেছে। খান সেনাদের সদর দফতর হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিমান বাহিনীর সদর দফতর করা হয়েছে যক্ষ্মা হাসপাতালে। আর সামরিক পর্যবেক্ষণস্তম্ভের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ঢাকার ইন্টারকনটিনেনটাল হোটেল। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এইসব স্থানগুলি রাষ্ট্রপুঞ্জ-কর্মী এবং রেডক্রসের নিরাপত্তার জন্য নিরাপদ এলাকা বলে ঘোষিত হয়েছে। আমাদের বিমান বাহিনীর কাছ থেকে পাওয়া এক নির্ভরযোগ্য সংবাদে জানা যায়, খান সেনারা ঢাকার উত্তরাঞ্চলে পাঁচটি বাংকারের উপরে অসামরিক লোকদের আটক করে রেখেছে। এর উদ্দেশ্যে, ভারতীয় আক্রমণের হাত থেকে আত্মরক্ষা করা। কলকাতায় সামরিক মুখপাত্র বলেন, দলে দলে ছাত্রী সৈন্যরা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঢাকার ১৮ কিলোমিটার দূরবর্তী জয়দেবপুরের দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছেন। অন্য দিকে নরসিংদীর উত্তর-পূর্ব দিক থেকে ভারতীয় সেনা ও মুক্তিবাহিনীর আর একটি দলও দ্রুতগতিতে ঢাকার দিকে আগুয়ান। মুখপাত্র ঢাকার কাছাকাছি ভারতীয় বাহিনীর অবস্থান-স্থলের বিস্তৃত বিবরণ দিতে অস্বীকার করেন। ময়নামতীর প্রতিরোধ ভেঙ্গে পড়েছে কুমিল্লা খন্ডে ভারতীয় বাহিনীর প্রবল চাপে ময়নামতী ক্যান্টনমেন্টে শত্রর প্রতিরোধ ভেঙে পড়ছে। এখন ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় অর্ধেক ভারতীয় নিয়ন্ত্রনে।