পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৭১২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।



680

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খণ্ড

 মুজিবর এখন যে পর্যায়ে এসেছেন সেখান থেকে পূর্বাবস্থায় ফিরে যাওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। লক্ষ শহীদের শোণিতধারার অপমান সহ্য করবেন না বিদ্রোহী বাঙালী। স্বাধীনতার ঘোষণার প্রত্যাহারের পরিণতি বর্তমান নেতৃত্বের আত্মহত্যা। সংগ্রামের চরম মুহুর্তে এ পথ নিতে পারেন না কোন দূরদর্শী এবং বাস্তববাদী নেতা। পদার জলে নৌকা ডুবিয়ে চলে গেছেন ইয়াহিয়া খান। ডুবো নৌকা টেনে তোলা সম্ভব নয়। ইয়াহিয়ার আত্মসমর্পণের অর্থ তাঁর গদীচুতি। দুই চরম পথ এক জায়গায় মিশবার চেষ্টা ব্যর্থ হতে বাধ্য। তবু আপোষের অলীক স্বপ্ন দেখছেন নয়াদিল্লী। বাংলাদেশ সম্পর্কে কথা বলা কোন অধিকার নেই ইসলামাবাদের। ওদের ঔপনিবেশিক শাসন চূর্ণবিচূর্ণ হয়ত লড়াই চলবে দীর্ঘদিন। শেষ পর্যন্ত জিতবেন গণতন্ত্রী শক্তি। সংসদ সদস্যরাও তাই মনে করেন। এই যদি হয়ে থাকে তাঁদের আন্তরিক বিশ্বাস তবে ন্যায়ের সঙ্গে অন্যায়ের বোঝাপড়ার আশা তাঁরা ছেড়ে দেন। পশ্চিম পাকিস্তানের হিংস শাসকদের বিবেকের উপর চাঁটি মারার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন। যে জিনিসের কোন অস্তিতু নেই তার উপর চাপ এবং তার কাছে আর্জি অর্থহীন। স্বাধীন বাংলাদেশের সরকারের রীতিসম্মত আবেদন আসা মাত্রই তাকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি দানের জন্য প্রস্তুত থাকুন। তাহলেই পূর্বের মুক্তিযোদ্ধারা পাবেন অফুরন্ত সংগ্রামী প্রেরণা। সম্বিত ফিরবে ফ্যাসিষ্ট বর্বরদের। শবের পাহাড় হয়ত বাড়বে। কিন্তু গণতন্ত্র জয়যুক্ত হবে। বাংলাদেশ বাঁচবে।



(সম্পাদকীয়)
- - - - - - - - - -