পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৭৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

707 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শ্রীতারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায় প্রমুখ সাহিত্যিকবৃন্দ এক বিবৃতিতে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রের কাছে বাংলার জনগণের উপর মিলিটারী আক্রমণের তীব্র প্রতিবাদ ঘোষণা করেন ও এই ধরনের নৃশংসতার নিন্দা করে প্রতিরোধের বিষয়ে যথোচিত কর্তব্য পালনের জন্য দাবী জানান। ভারতীয় মহিলা ফেডারেশনের পঃ বঃ কমিটি এক বিবৃতিতে বলেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া কানের গণতান্ত্রিকতার নকল মুখোশ খুলে পড়েছে। কলকাতা পৌরসভার গত ২৬ মার্চের সাপ্তাহিক অধিবেশনে বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষদের সমর্থনে এক সর্বসম্মত প্রস্তাব গৃহীত হয়। ইউনাইটেড ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া কৰ্মচারী সমিতির পাক সার্কাস শাখা ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে এক তারবার্তা পাঠিয়ে বাংলাদেশের জনগণের আন্দোলনে সর্বপ্রকার সাহায্যের দাবি জানান। পশ্চিমবঙ্গ শান্তি সংসদের সভাপতি শ্রীবিবেকানন্দ মুখোপাধ্যায় এক বিবৃতিতে পূর্ব বাংলার মানুষের সংগ্রামের প্রতি সংহতি জানান। গত ২৭ মার্চ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেটের বাৎসরিক সভায় পূর্ব বাংলায় স্বৈরাচারী অত্যাচারের প্রতি ক্রুদ্ধ প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়। গত ৩১ মার্চ বাংলাদেশের ঐতিহাসিক গণমুক্তি সংগ্রামের প্রতি আন্তরিক সংহতি ও পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল ও ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের ডাকে পশ্চিমবঙ্গের এই ২৪ ঘন্টাব্যাপী হরতালে রাজ্যের জনসাধারণ অভূতপূর্বভাবে সাড়া দেন। আন্তর্জাতিক, পরিচয়, আফ্রো-এশীয় সংহতি ও পশ্চিমবঙ্গ শান্তি সংসদের উদ্যোগে গত ৩০ মার্চ ষ্টুডেন্টস হলে অনুষ্ঠিত এক মহতী সমাবেশে শ্রীনীরেস চক্রবর্তী সভাপতিত্ব করেন এবং এক সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করে মুক্তিযোদ্ধাদের যাবতীয় সাহায্যের জন্য চাপ সৃষ্টি ও সরকার কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বীকৃতির কথা বলা হয়। ইউনিভার্সিটি ইনষ্টিটিউট হলে গত ২৯ মার্চ শিল্পী সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবিদের এক বিরাট সমাবেশে অন্নদাশঙ্কর রায়, বিবেকানন্দ মুখাজী, অম্লান দত্ত, মৈত্রেয়ী দেবী, ইলা মিত্র প্রমুখ ভাষণ দেন। স্কটিশ চার্চ কলেজে ও সেন্ট পলস কলেজের ছাত্র ছাত্রী ও অধ্যাপকদের সভায় বাংলাদেশের মুক্তি যোদ্ধাদের সমর্থনে প্রস্তাব গৃহীত হয়। দক্ষিণ কলকাতার পাঠভবন, সাউথ পয়েন্ট, সত্যভামা, জগবন্ধু প্রভৃতি স্কুলের ছাত্ররা গত ৩১ মার্চ ধর্মঘটের পর পাক হাই কমিশনের অফিসে মিছিল করে যান ও সেখানে এক স্মারকলিপি পেশ করেন। কোন্নগর পৌরসভার গত ১৭ মার্চ অনুষ্ঠিত এক সভায় বাংলাদেশের মানুষের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামের প্রতি অভিনন্দন জানান। বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী সমিতির অন্যতম সম্পাদক শ্ৰী নির্মল দত্ত ও মেটাল বক্স ওয়াকার্স তাদের বিবৃতি মারফৎ বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামকে অভিনন্দন জানান। ভারতীয় গণসংস্কৃতি সংঘের সভাপতি শ্ৰী দিগিন বন্দোপাধ্যায় ও সম্পাদক শ্রী অন্নদাশঙ্কর ভট্টাচার্য এক বিবৃতিতে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত শিল্পী, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের সমবেতভাবে বাংলাদেশের জঙ্গশাহীর অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে আহবান করা হয়।