পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৭৮১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

749 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড રજ છે ! সীমান্ত দেখতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী, উদ্বাস্তুমন্ত্রী আনন্দবাজার পত্রিকা ২০ মে, ১৯৭১ আসছেন সীমান্ত দেখতে প্রতিরক্ষামন্ত্রী, উদ্বাস্তুমন্ত্রী আসছেন ষ্টাফ রিপোর্টার বাংলাদেশে দখলদার পাক ফৌজ ইদানীং পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্বাঞ্চলের অপর কয়েকটি রাজ্যের সীমান্ত লঙ্ঘন করে গুলিগোলা চালানোয় ভারত সরকার বিশেষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারের মনোভাব এ ব্যাপারে কঠোরতর হচ্ছে। ওই সীমান্ত এলাকার প্রকৃত অবস্থা পরিদর্শনের জন্য ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্ৰী শ্রী জগজীবন রাম তাই নিজে আগামী শনিবার দুই দিনের জন্য পশ্চিমবঙ্গে আসছেন। তিনি আসামের কয়েকটি সীমান্ত অঞ্চলও পরিদর্শন করতে চান। শ্রী রাম ছাড়া কেন্দ্রীয় পূনর্বাসনমন্ত্রী শ্রী আর কে খাদিলকরও শনিবার রাত্রে কলকাতায় আসছেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা সংক্রান্ত অতিরিক্ত সচিব শ্রী আর এন চোপড়া বুধবার কলকাতায় এসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর আসাম ও পশ্চিমবঙ্গ পরিদর্শনের এক সপ্তাহের মধ্যেই কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও উদ্বাস্তু পুনর্বাসনমন্ত্রী সীমান্ত সফর বিশেষ তৎপর্যপূর্ণ বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন। হানাদার ফৌজের বারবার ভারত সীমান্তে হানা প্রতিরোধ ভারত সরকার কতদূর অগ্রসর হবেন এবং শরনার্থীদের সম্পর্কেই বা কী ধরনের ব্যবস্থা অবলম্বন করবেন শ্রী রাম ও শ্রীখাদিলকরের সফরের পর তা চূড়ান্ত নির্ধারিত হতে পারে বলেও তথ্যাভিজ্ঞমহলে মনে করা হচ্ছে। এই সম্পর্কে আলোচনাকালে একজন সরকারী মুখপাত্র বুধবারও পাকফৌজ কর্তৃক পেটরাপোল সীমান্তে এবং সুন্দরবন এলাকার খোজডাঙ্গায় গোলাগুলি বর্ষণের উল্লেখ করেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী এর আগে পাক ফৌজের সীমান্ত লঙ্ঘন ভারত সরকার বরদাস্ত করবেন না বলে যে মন্তব্য করছেন তিনি তারও উল্লেখ করেন। বুধবার কলকাতায় রাজ্য সরকারের সূত্রে এই দু’জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর আসার খবর পাওয়া যায়। জানা গিয়াছে, শনিবার সকালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রী রাম সরাসরি বাগডোগরায় আসছেন। সেখান থেকে তিনি কোচবিহারের হলদিবাড়ি ও সুরতি এলাকায় যাবেন। এরপর আসাম সীমান্ত ঘুরে সন্ধ্যায় কলকাতায় আসবেন ও রাত্রে এখানে থাকবেন। পরদিন রবিবার সকালে তিনি চাকুলিয়া ও বনগাঁয় যাবেন। কয়েকটি শরনার্থী শিবির পরিদর্শন করবেন। অপরাহ্নে দমদম বিমান ঘাঁটিতে ফিরে এসে দিল্লী প্রত্যাবর্তন করবেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী খাদিলকর শনিবার রাত্রে এখানে আসবেন এবং রবিবার বনগাঁ সীমান্ত এলাকা ও শিবির পরিদর্শন করবেন। এদিকে বাংলাদেশের শরনার্থীদের ত্রাণ ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য বুধবার সন্ধ্যায় তিনজন মন্ত্রী শ্রী সন্তোষ রায়, ডাঃ জয়নাল আবেদিন এবং শ্রী তরুণকান্তি ঘোষ দিল্লি গিয়েছেন। উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্ৰী বিজয় সিংহে নাহার এদিন সকালেই দিল্লি রওনা হন। শরনার্থীদের ত্রাণ বাবদ ২৪০ কোটি একটি কর্মসূচী এদিন রাজ্য মন্ত্রীসভার অনুমোদন করা হয়। এই কর্মসূচী অনুযায়ীই ওই চারজন মন্ত্রী কেন্দ্রের কাছে ২৪০ কোটি টাকা চাইবেন। রাজ্য মন্ত্রীবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং পুনর্বাসন মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন।