পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (চতুর্দশ খণ্ড).pdf/৯৬৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

933 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ চতুর্দশ খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ৩৯২ নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েট যুগান্তর ৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১ ভেটোঃ বাংলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান দাবী নিরাপত্তা পরিষদে সোভিয়েট ভেটো বাংলাদেশ সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান দাবী রাষ্ট্রসংঘ, ৫ ডিসেম্বর (ইউ পি আই, এ পি)- আজ নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকা, ভারত ও পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে অস্ত্রসংবরণ ও সৈন্য প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে যে প্রস্তাব তুলেছিল, রাশিয়া তাতে ভেটো প্রয়োগ করেছেন। পক্ষান্তরে সোভিয়েত ইউণিয়নের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সমস্যার রাজনৈতিক সমাধান এবং বাংলাদেশে পাক সেনাদের হত্যাকান্ড বন্ধ করা হোক। কারণ এইটাই মূল বিরোধের উৎস এবং এগুলি বন্ধ হলেই বর্তমান সংঘর্ষের অবসান ঘটবে। সোভেয়েট প্রস্তাব উত্থাপন করেন সহকারী পররাষ্ট্র মন্ত্রী জ্যাকব এ মালিক। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে জানান, আমেরিকা যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, তা পক্ষপাতিত্বপূর্ণ এবং গ্রহণযোগ্য নয়। আমেরিকার প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় এগার জন প্রতিনিধি। তবে বৃটেন ও ফ্রান্স ভোটদানে বিরত থাকে। সোভিয়েট ও পোল্যান্ড বিপক্ষে ভোট দেয়। মিঃ জ্যাকব বলেন, আমেরিকার প্রস্তাবে এই সংঘর্ষের দায়িত্ব প্রকৃত দোষীর ওপর না চাপিয়ে অন্য পক্ষের ওপর চাপানো হচ্ছে। তা ছাড়া পাকিস্তান, তার বড় বড় রক্ষাকর্তারা এবং তাদের ব্লকের সদস্য রাষ্ট্রগুলি ভারত ও পাকিস্তানকে একই পর্যায়ে চেষ্টা করছে। এটা ভীষণ ভুল কাজ। কারণ যদি পাকিস্তান সামরিক কর্তৃপক্ষ পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের বৈধ প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় অসম্মত না হতেন তবে আজকের এই পরিস্থিতির উদ্ভব হতোই না। গত ডিসেম্বর মাসের নির্বাচনে এই সব প্রতিনিধি যথারীতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ভারতের ওপর অকথ্য অত্যাচার ঘটছে মিঃ মালিক বলেন, ভারতের ওপর অকথ্য অত্যাচার ঘটছে। এক কোটি শরণার্থী ভারতে এসেছে। তাদের দুঃখ কষ্ট অবর্ণনীয়। এই অবস্থায় নিরাপত্তা পরিষদ যদি বাংলাদেশের কোন প্রতিনিধির মুখ থেকে সেখানকার পরিস্থিতির কথা শোনেন তবে ভালো হয়। তা থেকে বিরোধের মূল উৎসভূমি কোথায় তা জানা যাবে। বেলজিয়াম, ইটালি, জাপানের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, ভারত ও পাকিস্তানকে মীমাংসার প্রথম পদক্ষেপরুপে অস্ত্র সংবরণ ও সামরিক তৎপরতা বন্ধ করতে বলা হোক। আরও বলা হয়, লক্ষ লক্ষ শরণার্থী যাঁরা ভারতে চলে এসেছেন তাঁরা স্বেচ্ছায় যাতে স্বদেশে ফিরে যেতে পারেন তার জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। সেক্রেটারী জেনারেল উ থান্টের সঙ্গেও যেন বিভিন্ন রাষ্ট্র ত্রাণকার্যের ব্যাপারে সহযোগিতা করেন। জরুরী অধিবেশন ভারতীয় সময় রবিবার সকাল। নিরাপত্তা পরিষদের জরুরী অধিবেশন বসল। বিবেচ্য বিষয়ঃ ভারত ও পাকিস্তানের কাছে অবিলম্বে অস্ত্রসংবরণ ও সৈন্য প্রত্যাহার আহবান জানানো হতে পারে কিনা।