পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (তৃতীয় খণ্ড).pdf/৩৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

325 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ তৃতীয় পত্র “মোনাফেকদের ক্ষমা নেই” বাংলাদেশ সরকার, প্রচার দপ্তর ............ δδ%ι 5 গণপ্রজাতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকার মোনাফেকদের ক্ষমা নেই ক্ষমতার দন্তে, উন্মত্ততায় মানুষ বিবেকবুদ্ধি হারিযে এমন সব কথাবার্তা বলে থাকে যখন মনে হয় মানুষ তার আসল হারিয়ে জানোয়ারের স্তরে নেমে এসেছে। পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাস এরূপ বহু নজীর সৃষ্টি করেছে। পশ্চিম পাকিস্তানের কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থে এতটুকু হতে পড়তে দেখলেই অস্থির হয়ে ওঠে। ন্যায় নীতির সমর্থকদের বিরুদ্ধে পশ্চিম পাঞ্জাবী গোষ্ঠী ও তাদের তাঁবেদারগণ তখন তাদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনায়, ষড়যন্ত্রে লেগে যায়। পাকিস্তানের ২৩ বছরের ইতিহাস ষড়যন্ত্রের ইতিহাস, শোষণ ও পীড়নের ইতিহাস। রাজবল্লভ, উমিচাঁদের দল কি আর জন্মগ্রহন করবে না গোলাম হোসেন?” নাট্যকারের সে আশঙ্কা অমূলক নয়। বাংলায় বহু বিশ্বাসঘাতক জন্ম নিয়েছে এবং তারা বহাল তবিয়তে বাংলাদেশ ও বাঙ্গালীর সাথে বেঈমানী করে চলেছে। বাংলার এই বেঈমান, বিশ্বাসঘাতকগণই কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠীর পদলেহী হয়ে দেশ ও দশের সর্বনাশ করে চলেছে। এদের দাস-সূলভ মনোভাবের উপর নির্ভর করে তাদের পাঞ্জাবী প্রভুরা বাঙ্গালীর বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করে, বাঙ্গালীদের উৎখাত করে। বাংলার মানুষ যখনই তাদের হক আদায়ের দাবী জানিয়েছে, ইনসাফের আওয়াজ তুলেছে,সুখে “বিচ্ছিন্নতাবাদী”, “ভারতের দালাল” বলে কুৎসা রটনা করে বাংলার সরল, সহজ মানুষের মনে ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে। অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস! যে দেশের সিংহপুরুষ মরহুম এ, কে ফজলুর হক লাহোর প্রস্তাব উত্থাপন করল, যে দেশের মানুষ তাদের প্রিয় নেতা মরহুম হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের পক্ষে নিরঙ্কুশ সমর্থন দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠাকে সুনিশ্চিত করেছিল, যে দেশের মানুষ তাদের প্রাপ্য আসন কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, মরহুম লিয়াকত আলী খান, চৌধুরী খালিকুজ্জামান, চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, খান আবদুল কাইয়ুম খানকে ছেড়ে দিয়েছিল, সে দেশের মানুষ ও তাদের নেতৃবৃন্দের দেশপ্রেমে কটাক্ষ করা হয়েছে। অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস! যে দেশের আবাল-বৃদ্ধবণিতা, নিজেদের অটুট ধর্ম-বিশ্বাসে পঞ্জেগানা নামাজ আদায়ে ভুল করে না, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে মদ খেয়ে বেহুশ হয়ে থাকে না, কামুক নারীর উলঙ্গ নৃত্য ও উৎকট সঙ্গীত শুনে ক্লাবে, ক্যাবারেতে আল্লাহর শান খুঁজে ফেরে না, ধর্মীয় বিধান মেনে যারা জিঘাংসাকে সংযত করে প্রীতি ও সৌহার্দ্যের বাণী প্রচার করে, যে দেশের মানুষ পশ্চিম পাঞ্জাবী শোষণ ও শাসনকে ছোট ভাইয়ের উৎপাত বলে মনে করে নির্যাতনের অবসান কামনায় তাদের উপর আল্লাহতালার হেদায়েত বর্ষণের প্রার্থনা জানায়, সেই বাংলাদেশের মানুষের ধর্ম বিশ্বাসে সন্দেহ সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালান হয়েছে ও হচ্ছে। অদৃষ্টের নির্মম পরিহাস! যারা কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহকে বিনা চিকিৎসায়, অবহেলায় মৃত্যুবরণ করতে বাধ্য করেছিল, যারা লিয়াকত আলী খানকে হত্যা করেছিল, যারা নিজেদের প্রভুত্ব বিস্তারে রাজনীতিতে ষড়যন্ত্রের আমদানী করে পাকিস্তানের পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলেছে, যারা বৃটিশের গোলামী করেছে আর পরে গোষ্ঠীস্বার্থে জনপ্রতিনিধিদের সরিয়ে দিয়ে নিজেরাই পাকিস্তানের ভাগ্য বিধাতা হয়েছে, যারা