পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

282 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড আমাদের ওপর এতো বেশী আর্টিলারী ফায়ারিং আসছিল যে, আমার লেফটে যে ইণ্ডিয়ান কোম্পানী ছিল সে কোম্পানীটা উইথড্র করে চলে গেল। এবং সে আর্টিলারী শেলিং-এ পড়ে খুব বেশী ক্যাজুয়েলটি হয়েছিল। ওটা কোন জায়গায় এ্যাটাক করেছিলেন? ওটা এ্যাটাক না, আমাদেরকে ডিফেন্স নিতে বলা হয়েচিল যাতে রোডটা কাট অফ করে দেওয়া হয়, রোডটা যাতে ওরা ইউস না করতে পারে। মৌলভীবাজার থেকে যাতে কোন রিফোর্সমেন্ট শমশেরনগরের দিকে যেতে না পারে। আমরা ওখানে ছিলাম, সকালের দিকে আমরা অপারেশন করেছিলাম। ওদের একটি গাড়ী রিফোর্সমেন্ট আসছিল। আমাদের শেলিং-এ ঐ গাড়ীটি নষ্ট হয়ে যায় এবং প্রায় ৩০ জনের মতো লোক মারা যায়। এরপরে শমশেরনগর থেকে যে সমস্ত লোক আমাদের দিকে আসতে চেষ্টা করেছিল তাদের উপর ফায়ার ওপেন করলে প্রায় ৬/৭ জন মারা যায়। এরপরও ওরা ঐদিনের মতো স্টপ করে এবং বিকেলের দিকে ওরা আমাদের উপর এতো বেশী আর্টিলারী ফায়ারিং এবং মর্টার ফায়ারিং, হেভি মর্টার ফায়ারিং শুরু করেছিল যে আমার বামদিকে ইণ্ডিয়ান যে কোম্পানীটা ছিল তাদের পক্ষে থাকা সম্ভব হচ্ছিল না। তারা সেখান থেকে উইথড্র করে। কারণ তাদের সেখানে খুব বেশী ক্যাজুয়েলটি হয়েছিল। ঐদিন প্রায় ৩০/৪০ জনের মতো ক্যাজুয়েলটি হয়েছিল। এর মধ্যে দু’জন অফিসারও ছিল। কৈলাশ শহরে আসার পর পরের দিন ২০ তারিখ সন্ধ্যার দিকে আমাকে পাঠানো হলো মনুতে যাওয়ার জন্য। মনুতে পাকিস্তানী আর্মির একটা ঘাঁটি ছিল। মনু একটি রেলষ্টেশন। মনু রিভারের উপর দুটো ব্রীজ আছে। একটা রেলওয়ে ব্রীজ আর একটা রবোর্ডে ব্রীজ। যেটার সাথে শমশেরনগরের লিংক আছে কুলাগড়ের, আর কুলাগড়ের লিংক আছে মৌলভীবাজারের সাথে। প্রথম দিন গেলাম রাতে, আমরা পৌঁছুলাম ১২টার দিকে। তিনটার দিকে ওদের পজিশন দেখতে গেলাম। পজিশন ঠিক বোঝা যাচ্ছিলা না। দুই পাড়েই পজিশন ছিল। ওটা কত তারিখে ? ওটা ডিসেম্বরের প্রথম তারিখে। ডিসেম্বরের ১ তারিখ রাতে আমরা এ্যাটাক করি, আমরা মনু এবং যাওয়ার সময় যাতে রাজনগর থানা এলাকা দেখে যাই। আমি ওখান থেকে মনু রিভার ফলো করে করে রাজনগর থানা এলাকায় গেলাম। আপনি সমস্ত ট্রপস নিয়ে চলে গেলেন? সমস্ত ট্রপস নিয়ে রাজনগর এলাকায় গেলাম। রাজনগর এলাকা আমরা মার্চ করলাম। দেখি ওদিকে কোন ফোর্স নাই। তারপর আমরা ওদিকে মৌলভীবাজার আসলাম, মৌলভীবাজার থেকে আমি ফেঞ্চগঞ্জ পর্যন্ত আসছিলাম। এর ভিতরে আমার সাথে আর কোন ফোর্সের দেখা হয়নি। ইন দি মিন টাইম সারেণ্ডার হয়ে যায়।