পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৩১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খণ্ড
294

 ২রা নভেম্বর ঐ একই অবস্থানে আমরা আক্রমণ চালাই। ঐদিন পাকিস্তানী সৈন্যদের অবস্থানে আক্রমণকালে সুবেদার সালাম ও তার পার্টি, এ এস আই হাবিবুর রহমান, ইণ্ডিয়ান বিএসএফ-এর খড়ক বাহাদূর থাপা (হাবিলদার) ও ক্যাপ্টেন ফারুক আমাদের সাথে ছিলেন।

 ৩রা নভেম্বর বারোপনে নামক গ্রাম অপারেশন করি। সে স্থানে পাক সৈন্যদের সাথে গোলাগুলি বিনিময় হয়। ইণ্ডিয়ান মেজর সৎপতি আমাদের দেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়ে যান।

 ২০শে নভেম্বর বড়হাট নামক স্থানে সারিগোয়াইন রাস্তার উপর, ২৪শে নভেম্বর আটলু নামক স্থানে সারিগোয়াইন রাস্তার উপর এবং ২৬শে নভেম্বর মুকাম নামক স্থানে সারিগোয়াইন রাস্তার উপর মাইন বসাই। ঐ রাস্তাটি তখন পাকসেনাদের দখলে ছিল। রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে সৈন্য ও রাজাকার পাহারা থাকত। বড়হাট নামক স্থানে বসানো মাইনের বিস্ফোরণে শত্রুসৈন্যের একটি জীপ বিধ্বস্ত হয়। ফলে ২জন নিয়মিত পাকসৈন্য নিহত হয়। মুকাম নামক স্থানে বসানো মাইনের বিস্ফোরণে শত্রুসমর্থিত একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত এবং অপর দুই ব্যক্তি আহত হয়। পর পর এই ঘটনার পর শত্রুসৈন্যরা রাস্তাটির ব্যবহার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়।

 ২৮শে নভেম্বর দুই প্লাটুন গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা, ভারতীয় বি এস এফ-এর একটি সেকশনসহ আমি সারিগোয়াইন রাস্তার নিকটবর্তী গুয়াখারা নামক স্থানে শত্রুসৈন্যদের প্রত্যাশায় এ্যামবুশ করি। ২৯শে নভেম্বর ১-৪৫ ঘটিকায় সারিগোয়াইন রাস্তার উপর টুকেরবাজার ব্রীজটি আমরা উড়িয়ে দিই। এই স্থানে প্রহরারত রক্ষীদের সাথে সংঘর্ষে একটি ৩০৩ রাইফেলসহ চারজন রাজাকার আটক করি। কিন্তু ফেরার পথে আমাদের দলটি পাকিস্তানী সৈন্যদের এ্যামবুশ-এর আওতায় পড়ে যায়। পাকিস্তানী সৈন্যদের মধ্যে আজাদ কাশ্মীর রিজার্ভ ফোর্স ছিল। এরা আমাদের দলটির উপর এইচ-এম-জি ও অন্যান্য স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে আক্রমণ চালায়। শত্রুসৈন্যরা চারদিকে ঘিরে ফেলেছিল। এই অবরুদ্ধ এবং পচণ্ড গোলাগুলির মাঝেও অসীম সাহস, উন্নত কৌশল ও উপস্থিত বুদ্ধির জোরে শত্রুবেষ্টনী ভেদ করে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হই। আজাদ কাশ্মীর রিজার্ভ ফোর্সের মোট ১১ জন আমাদের হাতে নিহত এবং ৪ জন রাজাকার আহত হয়। আমাদেরও খুব ক্ষতি হয়। ইণ্ডিয়ান বিএসএফ-এর একজন সুবেদারসহ তিনজন, একজন পুলিশের এএসআই ও কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা মারা যান।

 ১৬ই ডিসেম্বর যুদ্ধবিরতি ঘোষণার প্রাক্কালে আমরা সালুটিকর বিমান বন্দর (সিলেট) পর্যন্ত পৌছি। ঐদিন দুইজন রাজাকার আমাদের কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। তারা হলো: (১) মোঃ আলী - খাস মৌজা বারহলি, ৩০৩ রাইফেল মার্ক নং ৩, নং ৪৯৬২। (২) মনোহর আলী- ফুডপুর, কুপনাখাই, রাইফেল নং পি এফ ১৬১২৮৫ নং ৪, মার্ক-১।


সাক্ষর : মোঃ রফিকুল আলম
২২-৭-৭৮

॥ একটি অপারেশন-এর রিপোর্ট ॥

To

 The sub-Sector Commander,

 Tamabil M. F. (Dawki)

 Sub: Report on the occurance of 28th Nov. '71 night.

Sir,

 I beg to report that on 25.11.71 at about 15.00 hrs (3.00 p.m) I met with Major B. S Rao and I was ordered to (a) deny Sari-Goain road completely to enemy (b) lay mines (c)