পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৩৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

367 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড ১৫। ৮নং সেক্টরে সংঘটিত যুদ্ধের বিবরণ বাংলা একাডেমীর দলিলপত্র | মে-ডিসেম্বর ১৯৭১ সাক্ষাৎকারঃ লেঃ কর্নেল এম এ ওসমান চৌধুরী* Ծ Ֆ-Ֆ-Գ8 খুলনা ও যশোরের ছিন্নমূল ও বিক্ষিপ্ত অনেক ইপিআর এবং কিছুসংখ্যক নিয়মিত বাহিনীর সৈন্য এবং পুলিশ আমার সাথে যোগদান করে। আমি আমার সমস্ত বাহিনীকে পুনঃসংগঠিত করে ৭টি কোম্পানীতে বিভক্ত করে ৭ জায়গায় ৭ জন কোম্পানী কমাণ্ডারের অধীনে ৭ টি বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় নিয়োগ করিঃ (১) প্রথম কোম্পানী উত্তরে মহেশকুণ্ড বিওপি এলাকায় লেষ্টন্যান্ট জাহাঙ্গীরের (বর্তমানে ক্যাপ্টেন) অধীনে। (২) দ্বিতীয় কোম্পানী তার দক্ষিণে জীবননগর বিওপি এলাকায় ক্যাপ্টেন মুস্তাফিজুর রহমানের অধীনে। (৪) ৪র্থ কোম্পানী কাশিপুর/মুকুন্দপুর বিওপি এলাকায় ক্যাপ্টেন খন্দকার নজমুল হুদার (বর্তমানে লেঃ কর্নেল) অধীনে। (৫) ৫ম কোম্পানী বেনাপোল কাষ্টম চেকপোষ্ট এলাকায় ক্যাপ্টেন আবদুল হালিমের অধীনে। (অবশ্য এই কোম্পানীর কমাণ্ডার কয়েকবার পরিবর্তিত হয়। ক্যাপ্টেন তৌফিকও কিছুকাল এই কোম্পানীর কমাণ্ডার ছিলেন।) (৬) ৬ষ্ঠ কোম্পানী আরও দক্ষিণে বাকশা/কাকডাঙ্গা বেনাপোল থানাধীন এলাকায় ক্যাপ্টেন শফিউল্লার অধীনে (৭) ৭ম কোম্পানী ভোমরা এলাকায় ক্যাপ্টেন (বর্তমান মেজর) সালাউদ্দিনের অধীনে। মে মাসের শেষদিকে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন হেডকোয়ার্টার ‘মুজিবনগরে বদলি হলে ক্যাপ্টেন মাহবুবউদ্দিনকে এই কোম্পানীর ভার দেয়া হয়। আমার বাহিনীর পুনঃসংগঠিত হওয়ার পর আমি সম্মুখসমর পরিহার করে যথাসম্ভব গেরিলা পদ্ধতিতে শত্রর মোকাবিলা করার জন্য নির্দেশ দেই। মে মাসের প্রথমার্ধে মুজিবনগরে বাংলাদেশ ফোর্সেস হেডকোয়ার্টার সংগঠিত হয়। ঐ মাসেরই শেষার্ধে গেরিলা পদ্ধতিতে যুদ্ধ করার পুরাপুরি সিদ্ধান্ত নেয়া এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ নিয়ম সহকারে সমস্ত সেক্টরে নির্দেশ প্রচার করা হয়। আমার সেক্টর হেডকোয়ার্টার স্থাপন করি বেনাপোলের সীমান্তবর্তী এলাকায়। ওখান থেকে সময়ে সময়ে যেসব বিদেশী গুরুত্বপূর্ণ লোকজন অথবা সাংবাদিক ও টেলিভিশন রিপোর্টাররা যুদ্ধের প্রত্যক্ষ রিপোর্ট নিতে আসতেন, তাঁদেরকে বাংলাদেশের ভিতরে নিয়ে যেতাম। মে মাসের শেষার্ধে খবর আসল যে, ইংল্যান্ড থেকে মাননীয় জন ষ্টোনহাউস এমপি ও মিঃ চেসওয়ার্থ মুক্তিবাহিনীর দ্বারা মুক্ত এলাকা সত্যি বাংলাদেশের এলাকা কিনা, সেই তথ্য পর্যবেক্ষণ করতে বাংলাদেশে আসবেন। আমার নির্দেশমত ব্যবস্থা হল ভারতের বয়রা এলাকা দিয়ে তাঁরা বাংলাদেশে ডুববেন। সব ব্যবস্থা করে আমি সীমান্তের একটা সীমান্ত খুঁটির কাছে মহামান্য অতিথিদের অপেক্ষায় রইলাম। অতিথিদের আগমনের সাথে সাথেই আমি তাঁদেরকে সীমান্ত খুঁটি দেখিয়ে বললাম--This is the border surveypost and the moment you have crossed this post, you are on the Bangladesh soil. Sir let us have a photograph here as a mark of identification between the two lands." ওখানে ফটো তোলার জন্য তাঁদেরকে ভিতরে নিয়ে গেলাম। গাছের উপর, বাড়ির ছাদে তাঁরা বাং -- পতাকা জন্য দেখতে পেলেন। পরিদর্শন করলেন আমার সেখানকার কোম্পানী হেডকোয়ার্টার। দেখতে পেলেন মুক্তিবাহিনীর আনাগোনা, কর্তব্য পালন, পাহারা ও ডিউটি পরিবর্তন ইত্যাদি। খুশী হলেন, আমাদের সাথে মোরগের মাংস দিয়ে দুপুরের খাওয়া খেলেন। আমাদের অধিকৃত চীনা হাতিয়ার হাতে নিয়ে বাংলাদেশের পতাকাকে পিছনে রেখে ছবি তুললেন। মুক্ত এলাকা পরিদর্শন

  • ১৯৭১ সালে মেজর পদে কর্মরত ছিলেন।