পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৩৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

372 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ ১৬। ৮নং সেক্টরে সংঘটিত যুদ্ধ সম্পর্কে বাংলা একাডেমির মে-ডিসেম্বর অন্যান্যের বিবরণ দলিলপত্র Ֆի, ԳՏ সাক্ষাৎকারঃ লেঃ কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান と-〉の-〉あ°○ বেতাই, বানপুর, বয়রা, বনগাঁ, গোজাডাঙ্গা ইত্যাদি স্থানে মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প করা হয়ঃ ১. বেতাই ক্যাম্পের কোম্পানী কমাণ্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন আজম চৌধুরী। ২। বানপুরে ছিলেন ক্যাপ্টেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩ বয়রায় ছিলেন ক্রাপ্টেন কে, এন, হুদা ৪। বনগাঁয় ছিলেন ক্যাপ্টেন তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী। ৫। গোজাডাঙ্গায় ছিলেন ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন এবং পরে ক্যাপ্টেন মাহবুব উদ্দিন। আমাকে বানপুর ক্যাম্পে রাখার উদ্দেশ্য ছিল, আমি ছিলাম প্রকৌশলী অফিসার। যশোর, ঈশ্বরদী, কুষ্টিয়াতে যে সমস্ত রেল চলাচল করত কৌশলে যাতে ঐ সমস্ত রেল চলাচল ব্যাহত করতে পারা যায় তার জন্য বিশেষভাবে আমাকে ক্যাম্পে নিয়োগ করা হয়। মে মাসঃ মে মাসের ১২/১৩ তারিখে কুষ্টিয়া জেলার জীবননগর বিওপিতে এ্যামবুশ করে পাক আর্মিদের কাছ থেকে একটি জীপ দখল করা হয়। পাক আর্মি মাঝে মাঝে বিওপিতে আসত। তারা মুক্তিবাহিনীর হামলায় জীপটি রেখে চলে যায়। মুক্তিবাহিনী সর্বপ্রথম ঐ জীপটি পাকবাহিনী থেকে উদ্ধার করে। ঐ জীপের ভিতর থেকে পাক আর্মির চারখানা ব্যাক্তিগত চিঠি উদ্ধার করা হয়। চিঠিগুলির মধ্যে একটিতে উর্দুতে এক সৈন্য তার বাবার কাছে লিখছে যে, “তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে যে সমস্ত ঘটনা ঘটছে পশ্চিম পাকিস্তানে বসে শুনছেন, তার চেয়ে বহুগুণ সব ঘটছে।” ২য় পত্রে জনৈক সৈনিক তার বন্ধুর কাছে লিখছেঃ ‘একটি কমান্ডো ব্যাটালিয়নের চট্টগ্রাম যুদ্ধে আমরা ৪/৫ জন ছাড়া আর সবাই মারা গেছে। আমাদের অন্য ব্যাটালিয়নের সাথে থেকে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। এভাবে যুদ্ধ করতে করতে মে মাস কেটে গেল। মে মাসের ২১/২২ তারিখে দর্শনা ও জীবননগরের রাস্তার মাঝামাঝি স্থানে শিয়ালমারী নামে একটি জায়গা আছে। ঐ রাস্তায় মুক্তিযোদ্ধারা ৪ খানা ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী মাইন লাগায়। সেখানে ব্রীজ না থাকার জন্য একটি ডাইভারশন সড়ক ছিল। এই মাইন লাগানোর ফলে পাকবাহিনীর একটি ট্রাক উল্টে যায়। এর ফলে ৮/১০ জন পাকসেনা মারা যায় এবং কিছু আহত হয়। মাইন বিস্ফোরণের সময় পাকবাহিনী বুঝতে পারেনি যে মাইন ফেটেছে। তারা মনে করেছিল মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ করেছে। ঐ রাস্তা দিয়ে একই সঙ্গে দুটি ট্রাক ও একটি জীপ যাচ্ছিল। প্রথমে জীপটি রাস্তা পার হয়ে চলে যায়। পরে ট্রাকটি ধ্বংস হয় এবং সবার পিছনের ট্রাকটি রক্ষা পায়। পাকবাহিনী ওখানে ২/৪ গ্রামবাসীকে গুলি করে হত্যা করে ও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। মে মাসের ১৫ তারিখের দিকে নায়েক বাশার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের (অনার্স) একজন ছাত্র বাবলু ও অপর তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে এক্সপ্লোসিভ দিয়ে দর্শনা থেকে ২ মাইল উত্তরে দুতপাতিলা নামক স্থানে রেলব্রীজ উড়িয়ে দেয়ার জন্য পাঠান হয়। তাদের কাজ ছিল, ঐ দিন রাত্রিতে যে ট্রেনটি আসবে এবং তা যখন ব্রীজের উপর দিয়ে যাবে তখন তাকে এক্সপ্লোসিভ দিয়ে উড়িয়ে দেওয়া। দুঃখের বিষয়, ঐ দিন সারারাত আর কোন ট্রেন আসেনি। মুক্তিযোদ্ধারা এক্সপ্লোসিভ তার নিয়ে পাশের আখক্ষেতে অপেক্ষা করছিল। ভোরবেলায় একজন

  • ১৯৭১ সালে ক্যাপ্টেন পদে কর্মরত ছিলেন।