পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৪০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

379 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড ৭ই ডিসেম্বর যশোর মুক্ত হয়। ৩ ইঞ্চি মর্টার বাহিনী নিয়ে আমি নড়াইল যাই। সেখানে ১৫০ জন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। স্বাক্ষরঃ অলীক কুমার গুপ্ত যশোর সেনানিবাস こbr-○-a○ সাক্ষাৎকারঃ সুবেদার মেজর তবারক উল্লাহ ২৮-৬-১৯৭8 সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখ রাত বারটার সময় আমি এবং ক্যাপ্টেন শফিক উল্লাহ এক কোম্পানী আক্রমণ চালাই। চারদিন পর্যন্ত তুমুল লড়াই চলে। এই যুদ্ধে আমাদের পক্ষে সিপাহী মতিয়ুর রহমান, ল্যান্স নায়েক আবুল হাশেম, ল্যান্স নায়েক শফিকউদ্দিন চৌধুরী, শাহাদাতবরণ করেন। কয়েকজন বেসামরিক ব্যক্তিও শাহাদাতবরণ করেন। পাকিস্তানীদের পক্ষেও অনেকে হতাহত হয়। আমাদের একটি কোম্পানীর উপর শত্রদের ৪টি কোম্পানী আক্রমণ চালায়। ক্যাপ্টেন শফিকউল্লাহ এই যুদ্ধে আহত হন। সাক্ষাৎকারঃ নায়েক সুবেদার আবদুল মতিন পাটোয়ারী মুজিবনগর গার্ড অব অনার দেওয়ার পর আমার ক্যাম্পে ফিরে যাই এবং সেখান থেকে আবার যুদ্ধে অংশ নেই। ২০শে মে তারিখে আমি আমার পেট্রোল নিয়ে মুজিবনগরে ছিলাম। খবর পেলাম পাকসেনাদের একটি প্লাটুন বল্লভপুর মিশনারী চার্চে এসেছে লুটতরাজ করতে। আমি আমার প্লাটুনকে ২টি ভাগে ভাগ করে একটিকে নিয়ে আমি নিজে বাগুয়ানে এ্যামবুশ করে থাকি, অপর দলটিকে বল্লভপুর রোড জংশনে বসিয়ে রাখি। বেলা দেড়টার সময় পাকসেনারা ফিরছিল। আমি আক্রমণ করে বসি। প্রায় একঘন্টা যুদ্ধ হয়। পাকবাহিনীর ১৭ জন নিহত ও ৫ জন আহত হয় এবং ১টি গাড়িসহ বহু অস্ত্র উদ্ধার করি। আমি মুজিবনগরে পাক্কা ঘাঁটি করে থাকতাম। ৩রা জুন তারিখে পাকবাহিনীর ৫০০/৬০০ সৈন্য ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ব্যাপকভাবে আক্রমণ করে বেলা ৪টার সময়। আমাদের মোট সৈন্য সংখ্য ছিল মাত্র ৪০ জন। একটি দল ছিল আমার নেতৃত্বে। অপরটি ছিল নায়েক সুবেদার তফাজ্জল হোসেনের নেতৃত্বে। পাকসেনারা সারিবদ্ধভাবে বাগুয়ানে কিছু প্রস্তুতি রেখে আমাদের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। পাকসেনাদের আক্রমণে আমরা টিকতে ব্যর্থ হই। পিছু হটতে থাকি। এক সময় পাকসেনারা আমাদের ঘাঁটি দখল করে নেয়। আমাদের ঘাঁটি দখলের পর পাকসেনারা ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্তভাবে আমাদের ঘরদুয়ারে আগুন লাগিয়ে দেয় আমরা তা দেখতে পাচ্ছিলাম। আমি পুনরায় কিছু জওয়ান নিয়ে পিছন দিক থেকে আখক্ষেতে বসে সামরিক কায়দায় বড় রকমের আক্রমণের কমাণ্ড দেই। উদ্দেশ্য ছিল এটা বোঝানো যে আমরা বহু সৈন্য আছি। সাথে সাথে এলএমজি ব্রাশ চালাতে থাকি। এতে বহু পাকসেনা খতম হয়। বাকিরা সব পালাতে থাকে। পাকসেনারা পজিশন নেবার সুযোগ পায় না। আমরা আবার ঘাঁটি দখল করে নেই। পাকসেনা খতম হয় ২৮ জন, ২০ জন আহত হয়। আমার পক্ষের কেউ হতাহত হয়নি। তারপর ১৪ই জুন, ২০শে জুন ও ২১শে জুন তারিখে পাকবাহিনীর সাথে আমাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। একদিনের যুদ্ধে আমাদের কোন হতাহত হয়নি। পাকবাহিনী বেশকিছু ক্ষয়ক্ষতি স্বীকার করে। ১৭ই জুলাই তারিখের ঘটনা। আমাদের ইনফরমার ছিল ভাদু মগুল। গোপাল নগরে সে পাকসেনাদের সাথে থাকতো। তারা যখন যা চাইতো সব দিতে হতো। ভুাদুমণ্ডল লোক মারফত খবর পাঠায় যে, ২৭শে জুলাই