পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৪৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

463 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড এবং গোলাবারুদের পরিমাণ এত ছিল যে, বাইরের কোন সাহায্য ব্যতিরেকেই জামালপুর সীমান্ত এলাকাতে তারা আরও তিন মাস যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারতো। অন্যদিকে ডালু সাবসেক্টরেও প্রায় ১০০০ মুক্তিযোদ্ধা লেঃ আবু তাহেরের নেতৃত্বে ডালু, হালুয়াঘাট, ময়মনসিংহ রোডে অগ্রসর হয়ে বাঘমারা সেক্টরের আরো প্রায় ২০০০ মুক্তিযোদ্ধা লেঃ কামালের নেতৃত্বে হালুয়াঘাটের পশ্চিমে লেঃ তাহেরের সাথে মিলিত হয়ে ভারতীয় এবজা সেক্টরের সহয়তায় উত্তর এবং উত্তরপূর্ব দিক থেকে ময়মনসিংহ অবরোধ এবং আক্রমণ করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল। অন্যদিকে জামালপুর পতনের পর ঐ অঞ্চলের মুক্তিযোদ্ধাদের ময়মনসিংহের পশ্চিম এবং দক্ষিন দিক থেকে ময়মনসিংহে অবরোধ করে একই সময়ে ময়মনসিংহ আক্রমণ করার পরিকল্পনা ছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী ডালু এবং বাঘমার সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধা লেঃ তাহের এবং লেঃ কামালের নেতৃত্বে ময়মনসিংহ শহরের দিকে অগ্রসর হয়। অন্যদিকে শিবপুর এবং মহেশখোলা সাবসেক্টরের প্রায় ৫০০ মুক্তিযোদ্ধাদের মেজর মতিউর রহমানের নেতৃত্বে নেত্রকোনা দখল করার পর কিশোরগঞ্জ হয়ে ঢাকার জয়দেবপুরে ১১ নং সেক্টরের সঙ্গে মিলিত হওয়ার পরিকল্পনা ছিল। আর ময়মনসিংহ ও জামালপুরের পতনের পর এই বিরাট মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী হয়ে টঙ্গি পর্যন্ত অবরোধ করার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু ১১ নং সেক্টরের হাতে জামালপুর পতনের পর ময়মনসিংহ এবং টাঙ্গাইল থেকে পাকিস্তানী বাহিনী পলায়ন করে। মুক্তিবাহিনী তাদের পশ্চাদ্ধাবন করে এবং ভারতীয় প্যারাসুট বাহিনী টাঙ্গাইলের নিকটবর্তী পিগনা নামক স্থানে এক ব্যাটালিয়ন ছত্ৰীসেনা নামায়। একদিকে ছত্ৰীসেনা ও অন্যদিকে ধাবমান মুক্তিবাহিনীর সাম্মিলিত চাপে অসংখ্য গাড়ীসহ প্রায় ৩০০ পাক সৈন্য নিহত হয়। ময়মনসিংহ এবং টাঙ্গইল থেকে পলায়নরত পাকস্তানী বাহিনীর অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার কাদেরসহ সমস্ত ব্রিগেড ষ্টাফ ঢাকার কালিয়াকৈরের নিকট ধরা পড়ে। এরপর ঢাকা পৌছা পর্যন্ত মুক্তিবাহিনী আর উল্লেখযোগ্য কোন বাধার সম্মুখীন হয়নি। ১৬ই ডিসেম্বর বিকাল ৪টার সময় ১১ নং সেক্টর বাহিনী বীরবিক্রমে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে প্রবেশ করে। نيا ـرنا ـ aه সাক্ষাৎকারঃ সুবেদার মেজর জিয়াউল হক ՀԳ-Ն-Գ8 আমরা ই-পি-আর এর তিন কোম্পানী এবং আনসার- মুজাহিদের আনুমানিক ৬/৭ কোম্পানী নিয়ে ফুলপুর-হালুয়াঘাট হয়ে ভারতের ডালুতে আশ্রয় নিই। এবং বাংলাদেশের কমলাকান্দা থানার বিপরীতে ভারতের রংরায় সুবেদার আজিজ এক কোম্পানী, ডালুতে আমরা এক কোম্পানী এবং পুরাখাশিয়ামহেন্দ্রগঞ্জে সুবেদার হাকিমের এক কোম্পানী- যেখানে আনসার, মুজাহিদ এবং পুলিশ ছিল। ডালু, বারেংগাপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা এবং হাকিমের এক কোম্পানী- যেখানে আনসার, মুজাহিদ এবং পুলিশ ছিল। ডালু, বারেংগাপাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা এবং রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। জেলা সদর দফতর তুরা এখন থেকে নিকটবর্তী ছিল। পুরো এপ্রিল মাস মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্গঠন এবং প্রশিক্ষন দেয়া হয়। ইতিমধ্যে সীমান্ত এলাকার লোকজন পাক সামরিক বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। মে মাস থেকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আঘাত কর এবং পালাও এ কৌশলে গেরিলা অপারেশন শুরু করা হয়। উল্লেখযোগ্য যে হাতেম আলী তালুকদার এম-সি- এ এবং আবুল মনসুর আহমদ এম-সি-এ ভারতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত গেরিলা অপারেশনে আমাদের সংগে সাহায্য-সহযোগিতা করেছেন।