পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৫০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

477 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড এছাড়া লেঃ মঞ্জুর, লেঃ ফজলে হোসেন, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট আশরাফুল আলম প্রমুখ অফিসার এই ব্যাটালিয়নের বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। এই ব্যাটালিয়নে নায়েক সুবেদার আজিজের নেতৃত্বে একটি সার্পোট প্লাটুনও ছিল। ৮ম বেঙ্গলে যেসব অফিসার কমান্ড করেছেন তাঁরা হলেনঃ কমান্ডিং অফিসারঃ মেজর এ, টি, এম আমিনুল হক। সেকেন্ড ইন-কমান্ডঃ ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান চৌধুরী। ‘এ’ কোম্পানী কমান্ডারঃ ক্যাপ্টেন খালেকুজ্জামান চৌধুরী। ‘বি’ কোম্পানী কমান্ডারঃ ক্যাপ্টেন সাদেক হোসেন। ‘সি’ কোম্পানী কমান্ডারঃ ক্যাপ্টেন মোদাসসের হোসেন। ‘ডি’ কোম্পানী কমান্ডারঃ লেঃ মাহবুবুর রহমান। এছাড়া লেঃ এমদাদুল হক, লেঃ কাজী মনিবুর রহমান, লেঃ ওয়ালি-উল ইসলাম, লেঃ বাকের প্রমুখ তরুণ অফিসাররা এই ব্যাটালিয়নে কাজ করেন। জেড ফোস কামালপুর, বাহদুরাবাদ ঘাট, দেওয়ানগঞ্জ থানা, চিলমারী, হাজীপাড়া, ছোটখাল, গোয়াইনঘাট, টেংরাটোলা,গোবিন্দগঞ্জ, সালুটিকর বিমানবন্দর, ধলাই চা-বাগান, ধামাই চা-বাগান, জাকিগঞ্জ, আলি ময়দান, এম সি কলেজ, ভানুগাছা, কানাইয়ের ঘাট, বয়মপুর, ফুলতলা চা-বাগান, বড়লেখা, লাতু, সাগরনাল চা-বাগান ইত্যাদি স্থানে পাকসেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষে নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। সাক্ষাৎকারঃ মেজর আমিন আহমদ চৌধুরী* জেড ফোর্সের অপারেশনসমূহঃ ১ম ইষ্ট বেঙ্গলের কামালপুর যুদ্ধ মুক্তি সংগ্রামে শত্রর সাথে মুখোমুখি লড়াই শুরু করি আগষ্ট’৭১-এর পর থেকে। এর আগে আমরা ছিলাম ডিফেন্সে, আর শত্ররা আমাদের উপর আক্রমণ করতো। বিলোনিয়া যুদ্ধের পর থেকে শত্ররা আত্মরক্ষামূলক যুদ্ধের ভূমিকা গ্রহণ করে, আর আমরা আক্রমণকারীর। আমাদের ব্রিগেডের (জেড ফোস) প্রথম আক্রমণ পরিচালনা করেন মেজর (বর্তমানে লেঃ কর্নেল) মইনুল ইসলাম চৌধুরী (১ম ইষ্ট বেঙ্গল) ডেলটা কোম্পানী নিয়ে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দীন মমতাজ ও ব্রেভো কোম্পানী নিয়ে ক্যাপ্টেন হাফিজ এ আক্রমণের ব্যুহ রচনা করেন। আর ক্যাপ্টেন মাহবুব (পরে সিলেট রণাঙ্গনে শহীদ হন) কাট-অফ পার্টি নিয়ে ওঁৎ পেতে বসেন শত্রর ডিফেন্সের পেছনে। আক্রমণ করাকালীন একটি বস্তুর প্রয়োজন হয় বেশী, তা হলো সিংহহদয়। ইংরেজীতে যাকে বলে লায়নহাট। ডিফেন্সে যারা থাকে তারা বাংকারে থাকে, ফলে স্বভাবতই ছোট ছোট হাতিয়ার এমন কি ডাইরেক্ট আর্টিলারী শেল থেকে রক্ষা পায়। সে জন্যই সাধারনতঃ দেখা যায় যে, একটি ডিফেন্সকে আটিলারী থেকে শুরু করে ট্যাংক ও বিমান হামলা করে সেই ডিফেন্সকে তছনছ করে ফেলার পরেও মাত্র দু-একজন সাহসী যোদ্ধা অকুতোভয় মনোবলে বলীয়ান হয়ে বাংকার থেকে সেই প্রচন্ড গোলাগুলির মাঝে মাথা নিচু করে মুখ থুবরে পড়ে না থেকে আক্রমণকারীর আক্রমণ সম্পূর্ণরুপে ব্যর্থ করে দেয়। সকল প্রকার সুষ্ঠ আক্রমণই ব্যর্থ হয়ে যায় যদি পূর্বাহ্নে পরিকল্পনা গ্রহণ না করা হয়। আর সুষ্ঠ পরিকল্পনা নেওয়া তখনই সম্ভব হয় যখন কমান্ডার নিজে চুপি চুপি শত্রশিবির দেখে আসে। মিলিটারী ভাষায় এই চুপি চুপি দেখে আসার নাম হচ্ছে রেকি পেট্টোলিং বাংলা মায়ের দামাল ছেলে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিন মমতাজ ছিলেন এক অভূতপূর্ব ব্যতিক্রম, অনন্যসাধারণ সৈনিক- পাকিস্তানের

  • ১৯৭১ সালের মার্চে ক্যাপ্টেন পদে কর্মরত ছিলেন।