বিষয়বস্তুতে চলুন

পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দশম খণ্ড).pdf/৫৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

507 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র : দশম খন্ড জায়গা আছে সেখানে এসে একটা স্কারমিশের মত হয়। সেখানে কিছু থলস স্কাউট ছিল। তাদেরকে আমাদের ব্যাটালিয়ন ঘেরাও করে ফেলে। এক সেকশন থলস’ স্কাউটকে আমরা বন্দী করে ফেলি। প্রশ্নঃ এটা কত তারিখ ছিল? উত্তরঃ এটা ৯/১০ তারিখ ছিল। ইতিমধ্যে আমরা দেখছিলাম যে, সিলেট রেডিও ষ্টেশনের ওপর ভারতীয় ৫৫ গুর্থ রাইফেলস হেলিকপ্টারযোগে নামিয়ে দেয়- তাদের সঙ্গে পাকিস্তান আর্মির বেশ যুদ্ধ চলছিল। আমাদের মধ্যে বেশ কিছু স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ছিল। তাদেরকে আমরা নদী ক্রস করে ওপারে পাঠিয়ে দিই খবর নেয়ার জন্য। ১৩/১৪ তারিখে আমরা খবর পাই আমাদের আর ওদিকে যাবার দরকার নেই। কেননা পাকিস্তান আর্মিরা পালিয়ে গেছে এবং সালুকটিকরের দিকে “কনসেনট্রেটেড” হয়েছে। ১৬ তারিখ আমরা সিলেট প্রবেশ করি। কিন্তু আনফরচুনেটলি আমাদের সিলেট শহরে যেতে দেয়া হয়নি। আমাদের স্টেশনে থাকতে বলা হয়েছে। প্রশ্নঃ কেন যেতে দেয়া হয় নাই? উত্তরঃ আমাদেরকে বলা হয়েছিল, আমরা যদি পাকিস্তান আর্মিদের সাথে ঝগড়া করি কিংবা তাদের মেরে ফেলি। তাছাড়া আরো হয়ত কারণ ছিল। আমরা স্টেশনে থাকাকালীন সময়ই খবর পাই যে সমস্ত দখল করা ম্যাটেরিয়ালস, আর্মস সেগুলো ট্রেনে করে ইন্ডিয়ায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সিলেট ষ্টেশন থাকাকালীন সময়ই ফাষ্ট বেঙ্গল আমাদের সাথে যোগদান করে। ঐ সময় জেনারেল ওসমানী আসেন, জেনারেল জিয়া আসেন। জেনারেল ওসমানী সিলেট ষ্টেশনে ফাস্ট বেঙ্গল এবং ৮ম বেঙ্গলের উদ্দেশে ভাষণ দেন। ইন্ডিয়ান ডিভিশনাল কমান্ডার যিনি ছিলেন জেনারেল রাও বা অন্য কেউ, আমার নামটা ঠিক মনে নেই- তিনিও আমাদের উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেখানে তিনি একটা কথা বলেছিলেন, আমার এখনও স্পষ্ট মনে আছে। তিনি বলেছিলেন,“ তোমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছে খুব ভল তোমাদের যুদ্ধ এখন শেষ। এখন তোমরা যার যার জায়গায় চলে যাবে। এবং তোমাদের এখন কাজ হবে দেশের গঠনকাজে আত্মনিয়োগ করা”। হয়ত তিনি আমরা যেন আর্মি থেকে সরে যাই সেই উদ্দেশ্যে বলেছিলেন। যাই হোক, আমরা জেড ফোর্সের আন্ডারে ছিলাম। এর মধ্যে খবর পাই জেড ফোর্সের আরেক ব্যাটালিয়ন, ৩য় বেঙ্গল যেটা ছিল ওটা ছাতক এসে পৌঁছে গেছে। প্রশ্নঃ সিলেট পাকিস্তান সেনাবহিনী ফাইনালি কবে সারেণ্ডার করে? উত্তরঃ ঢাকায় যেমন ১৬ই ডিসেম্বর করেছিল তখনও সম্পূর্ণ সারেণ্ডার করেনি। ১৩, ১৪, ১৫, ১৬ ডিসেম্বর এক জায়গায় এক এক সময় করেছে। তবে ঢাকায় যেদিন হয়েছে সেদিন সিলেটের কিছু কিছু জায়গা বাকী ছিল। ১৬ তারিখে যখন আমরা রেলওয়ে স্টেশনে আসি তখন আমরা শুনতে পাই যে পাকিস্তান আর্মিরা সালুটিকর এবং এখন যেটা সিলেট কলেজ সেখানে কনসেনট্রেট করেছে। আমি নিজে ১৮তারিখ সেই ক্যাম্পে যাই এবং দেখি তারা অলরেডি সারেন্ডার করে ফেলেছে। এক এক জায়গায় এক এক সময় যেমন ৯/১০ তারিখে শ্রীমঙ্গল আমাদের দেখে পিছু হটে গেছে। মৌলভীবাজারে আরো আগে হয়েছে। আমরা মৌলভীবাজার হয়ে এসেছিলাম। তখন সেখানে ব্রিগেড কমাণ্ড বা আর কোন কমান্ডার ছিল তাদের শেষের দিকে কোন কমান্ড ছিলনা। ছাতকে কিছু আগে সারেন্ডার করেছে। ১৬ তারিখের দিকে সিলেট ক্যাডেট কলেজে সিলেটের পুরো আর্মি সেখানে জড়ো হয়। সেখানে পাকিস্তান আর্মির তিনজন ব্রিগেডিয়ার ছিল এবং বেশকিছু অফিসার ছিল। প্রশ্নঃ আপনাদের মধ্যে কে কে ছিলেন সারেন্ডারের সময়? উত্তরঃ সারেন্ডারের সময় আমরা কেউ ছিলাম না। ইন্ডিয়ান আর্মি সারেন্ডার কন্ডাক্ট করে। আমাদের বাংলাদেশের ফোর্সকে সিলেটে ঢুকতে দেয়া হয়নি। সুরমা ব্রীজ তখন ভেঙ্গে গিয়েছিল, ইন্ডিয়ান আর্মি তা