পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বাদশ খণ্ড).pdf/৭৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংরাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বাদশ খণ্ড
৫১

যাওয়ার আহ্বা‌ন জানিয়ে ইয়াহিয়া খান ২২শে মে যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তারপরও ২০ লক্ষ উদ্বাস্তু ভারতে এসেছে। এ থেকে বোঝা যায় যে, যে পরিস্থিতিতে উদ্বাস্তুরা বাড়ীঘর ছেড়ে ভারতে এসেছে, সেই পরিস্থিতি এখনও বর্তমান—সেখানে এখনও আস্থার সঙ্কট রয়েছে।

 সুতরাং বর্তমান অবস্থায় বাংলাদেশে যাঁদের হাতে আইন ও শৃঙ্খলার ভার রয়েছে তাঁরা যদি জনগণের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন করতে পারেন তাহলেই উদ্বাস্তুদের আবার স্বদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

 শ্রী সিং বলেন যে, শেখ মুজিবুর রহমান এবং তাঁর আওয়ামী লীগ দলের শুধু পূর্ববঙ্গেই নয়, সমগ্র পাকিস্তানেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। সুতরাং তাঁদের সঙ্গেই একটা রাজনৈতিক মীমাংসায় আসতে হবে, যাতে জনগণের প্রতিনিধিরা সরকার গঠন করতে পারেন। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষকে বাংলাদেশ অধিবাসীদের সঙ্গে একটা মীমাংসায় পৌঁছতে হবে। বাংলাদেশের পক্ষে একমাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই কথা বলতে পারেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ব রাষ্ট্রগুলির কর্তব্য হচ্ছে পাকিস্তানের ওপর সম্ভাব্য সর্বপ্রকার চাপ সৃষ্টি করা এবং পাকিস্থান সরকারকে সুস্পষ্টভাবে বলা যে বাংলাদেশে অত্যাচার চালানোর অর্থই জনগণের অধিকারের ওপর অত্যাচার এবং এই অত্যাচার বন্ধ করতে হবে।

 শ্রী সিং বলেন যে, পাকিস্তানকে সর্বপ্রকার সরকারী এবং বেসরকারী সাহায্যদান বন্ধ করতে হবে, কেননা এই সাহায্য পেলে পাকিস্তান অত্যাচার চালিয়ে যেতে উৎসাহিত হবে এবং এই মর্মন্তুদ অবস্থা দীর্ঘায়িত হবে। পাকিস্তান যাতে রাজনৈতিক মীমাংসায় বাধ্য হয় সেজন্য চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

—পি টি আই