পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/২৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

243 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড শিরোনাম সূত্র তারিখ মিস ফাতেমা জিন্নাহকে ভোটদানের জন্য কৃষক-জনতার | পূর্ব পাকিস্তান কৃষক নভেম্বর, ১৯৬৪ প্রতি মওলানা ভাসানীর আবেদন সমিতির প্রচার পত্র মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর আহবান ভাইসব, নির্বাচনের প্রথম পর্ব শেষ হইয়া গিয়াছে। আপনারা নির্বাচনী সংস্থার সভ্য তথা ইউনিয়ন কাউন্সিলের সভা নির্বাচন করিয়াই আপনাদের সরাসরি ভোটের অধিকার পরিসমাপ্ত করিয়াছেন। এখন আবার নির্বাচনের দ্বিতীয় অধ্যায়ে পাকিস্তানের সর্বময় ক্ষমতাসম্পন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ আগামী ১৯৬৫ সনের ২রা জানুয়ারী ধাৰ্য্য হইয়াছে। একমাত্র আপনাদের নবনির্বাচিত সভ্যদের ভোটেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হইবেন। এই প্রেসিডেন্ট হইলেন এমন এক ব্যক্তি যাহার হাতে থাকিবে পাকিস্তানের প্রশাসনিক যন্ত্র পরিচালনার সর্বময় ক্ষমতা। তাহারই উপর নির্ভর করিবে এদেশের সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি। আপনাদের ভাগ্য নির্ধারণের কলাকৌশলও তিনিই উদ্ভাবন করিবেন। এই প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রতিদ্বন্দিতা করিতেছেন জনাব আইয়ুব খান ও মিস ফাতেমা জিন্নাহ। একজন অগণতান্ত্রিক একনায়কত্বের ও শোষণ-উৎপীড়নের উলঙ্গ প্রতিভূ আরেকজন গণতন্ত্র ও প্রাপ্তবয়স্কের ভোটে নির্বাচিত পার্লামেন্টারী সরকারে বিশ্বাসী। পূর্ণ গণতন্ত্র ব্যবস্থায় আপনাদের ভোটাধিকারসহ সমস্ত মৌলিক অধিকারেরই স্বীকৃতি থাকিবে। আপনাদের দাবী আদায়ের পথকেও সুগম ও সহজ করিবে। আপনারা প্রতিমূহুর্তেই অনুভব করিতেছেন আইয়ুব সরকারের শাসনের স্বাদই এই সরকারের পুলিশের গুলিতে সম্প্রতি কুমিল্লার বাতাকান্দি গ্রামে নিরীহ কৃষাণ/কৃষাণীর জীবন দিতে হইয়াছে। এই প্রকার আরও কত মর্মান্তিক ঘটনাই না রহিয়াছে। কাজেই আপনাদের নিজ নিজ স্বার্থ রক্ষার প্রয়োজনেই আপনাদিগকে এখন এমন সচেতন ও সক্রিয় হইয়া উঠিতে হইবে যাহাতে আপনাদের কাছে ওয়াদাবদ্ধ আপনাদেরই নির্বাচিত সভ্যরা প্রেসিডেন্ট পদে মিস জিন্নাহকে ভোট দিয়া তাহদের ওয়াদা পালন করেন। একদিকে যেমন মিস জিন্নাহকে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনের জন্য আপনাদিগকে অনলস প্রচেষ্টা চালাইতে হইবে অপরদিকে তেমনই আপনাদের দাবী আদায়ের তুলিতে হইবে। এই নির্বাচনে আপনাদের ঐক্যের শক্তিতে ভয় পাইয়াই প্রতিক্রিয়াশীল চক্র নানাভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করিয়া এই ঐক্যে ফাটল ধরাইতে প্রয়াসী হইয়াছে। যেখানে যেখানে কৃষক সমিতি আছে সেইগুলিকে শক্তিশালী করিয়া এবং যেখানে যেখানে নাই সেইখানে কৃষক সমিতি গঠন করিয়া দুর্বার কৃষক ঐক্য গড়িয়াই এই শয়তানের শয়তানীর সম্যক ও সঠিক উত্তর দিতে হইবে। ঐক্যবদ্ধ সংগঠনই আপনাদের শক্তি। আপনাদের দাবীর আন্দোলনকে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী করিয়া তোলার জন্য এখন হইতেই প্রতি ইউনিয়নে, থানায়, মহকুমায় ও জিলায় মিছিল ও সভা প্রভৃতি গড়িয়া তুলুন এবং ঐ সমস্তে আপনাদের নির্বাচিত সভ্যকেও অংশীদার করুন। ছাত্র মেহনতি জনতাসহ রাজনৈতিক সংযুক্ত বিরোধীদলের সক্রিয় সহযোগিতায় এই আন্দোলনকে দুর্বার করিয়া তোলার জন্য কৃষক কৰ্ম্মী ও দরদীদের সর্বতোভাবে চেষ্টা করিতে হইবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের নির্ধারিত তারিখে ও সময়ে মিছিল করিয়া আপনাদের নির্বাচিত সভ্যকে ভোটকেন্দ্রে নিয়া মিস জিন্নাহকে ভোট দেওয়ানও আপনাদের অবশ্য করণীয় কাজ। আমি বিশ্বাস করি তাঁহারা দেশ ও সমাজের কাজের জন্য তাহদের এই