পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খণ্ড
400
শিরোনাম সূত্র তারিখ
গণ-আন্দোলনের প্রশ্নে প্রেসিডেণ্ট আইয়ুব খানঃ বিক্ষোভ
করে সরকারকে টলানো যাবে না।
দৈনিক পাকিস্তান ৮ ডিসেম্বর, ১৯৬৮

বিক্ষোভ করে সরকারকে টলানো যাবে না।

 একের পর এক বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বা সভা করে বিরোধী দল বর্তমান সরকারকে টলাতে পারবে না। প্রেসিডেণ্ট মোঃ আইয়ুব খান গতকাল শনিবার ঢাকায় এ কথা ঘোষণা করেন।

 তিনি গতকাল মুসলিম লীগ কর্মী সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন।

 এ,পি.পি-পরিবেশিত খবরে প্রকাশ, প্রদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত মুসলিম কর্মীদের এই সম্মেলনে ১ ঘণ্টব্যাপী জোরালো ভাষায় বক্তৃতাকালে এই মর্মে সতর্ক করে দেন যে, বিরোধী দলের সর্বাত্মক লক্ষ্য হচ্ছে কিছু লাভের আশায় জাতীয় ঐক্য ও সংহতিকে ধবংস করা।

 প্রেসিডেণ্ট বলেন, তাদের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবীর লক্ষ্য হচ্ছে দুই প্রদেশকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা এবং পশ্চিম পাকিস্তানকে টুকরো টুকরো করে ফেলা। খোদা না করুন, যদি তাই হয়, তবে তা হবে আমাদের সকলের কাছেই আত্মহত্যার শামিল। তিনি আরো বলেন, আয়তনে ভারতের পাঁচভাগের এক ভাগের সমান পাকিস্তান যদি খণ্ড খণ্ড হয়ে যায়, তবে তার অস্তিত্বই বিলুপ্ত হবে।

 তিনি বলেন, বিরোধী দলের হাতে ক্ষমতা যাওয়ার অর্থ হচ্ছে সেইসব দুর্যোগময় দিনে ফিরে যাওয়া যা কি না দেশ ও জাতিকে বিভেদের দিকে টেনে নিয়ে যাবে এবং এর সার্বিক অর্থ হচ্ছে আমাদের নিজেদের পিঠেই ছুরিকাঘাত করা।

 মুসলিম লীগের এই সম্মেলনে থানা, শহর, মহকুমা, জেলা ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সভাপতি ও সম্পাদকগণ ছাড়াও গভর্নর জনাব আবদুল মোনেম খান, পাকিস্তান মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক, প্রাদেশিক মন্ত্রীবর্গ, জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের সদস্যগণ এবং সারা প্রদেশের মুসলিম লীগের নেতা ও কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

 প্রেসিডেণ্ট বলেন, কিভাবে ক্ষমতা দখল করা যায় বিরোধী দলের সবাই সেই মতলব আটতেই ব্যস্ত। বিরোধীদলিয় নেতাদের কারোরই কোন সুষ্ঠু বা গঠনমূলক কর্মসূচী নেই। তাঁরা আগে ক্ষমতা দখল করতে চান, তাঁর পরে তাদের কর্মসূচী গ্রহন করতে চান।

 বিরোধী দলগুলির হীন কার্যকলাপ নসাৎ করে দেবার জন্য প্রেসিডেণ্ট দলীয় কর্মীদের প্রতি সকল আভ্যন্তরীণ বিরোধ বিসর্জন দিয়ে পরিস্থিতির মোকাবেলার আহবান জানান। তিনি তাদেরকে এ কথা স্মরণ করিয়ে দেন যে, দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের ব্যাপারে আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। জাতির ঐক্য, দেশের সংহতি ও মাতৃভূমির উন্নয়ন বা অগগ্রতি এসব কিছু নির্ভর করছে মুসলিম লীগের উপর।  প্রেসিডেণ্ট বলেন, মুসলিম লীগ কর্মীদের এসব কিছুকে রক্ষা করতে হবে। কারণ, বিরোধী দলগুলি এসবকে চুরমার করে দিতে চায়।