পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খণ্ড
405
শিরোনাম সূত্র তারিখ
আটটি বিরোধী দলের উদ্যোগে গণতান্ত্রিক সংগ্রাম কমিটি
(ড্যাক) গঠিত আন্দোলনের আহবান
দৈনিক পাকিস্তান ৯, জানুয়ারী, ১৯৬৯

বিরোধী আর্ট দলের ঐক্যজোট ‘গণতান্ত্রিক সংগ্রাম কমিটি’ গঠন

 পিডিএমভুক্ত পাঁচটি দল ও অপর তিনটি দল গতকাল বুধবার বিকেলে আনুষ্ঠানিকভাবে আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার কথা ঘোষণা করে জনসাধারণকে নির্বাচন বর্জন করার আহবান জানিয়েছেন। এ ছাড়া তারা একটি গণতান্ত্রিক সংগ্রাম কমিটি (ডেমোক্র্যাটিক এ্যাকশন কমিটি) গঠনের কথা ঘোষণা করে জনসাধারণের রাজনৈতিক সার্বভৌমত্ব পুনরুদ্ধারের মহান দায়িত্ব পালনের জন্য বর্তমান আন্দোলনকে ব্যাপকতর ও সমন্বিত করে একটি ‘অহিংস, সংঘবদ্ধ ও শৃঙ্খলাবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার সংকল্প ঘোষণা করেছেন। গত এক সপ্তাহকাল যাবত ঢাকাস্থ, পিডিএম ৬ আওয়ামী লীগ, ন্যাপ (ওয়ালী খান গ্রুপ) ও জমিয়তে ওলেমায়ে ইসলামের ব্যাপক রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা শেষে গতকাল বিকেলে শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবন হতে উক্ত নেতৃবৃন্দ যুক্তভাবে এক ইস্তেহার প্রকাশ করেন।

 ঘোষণাপত্রে ন্যাপের (ওয়ালী খান গ্রুপে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জনাব আমীর হোসেন শাহ, জমিয়তে ওলেমায়ে ইসলামের সেক্রেটারী জেনারেল জনাব মুফতি মাহমুদ, ৬ দফাপন্থী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং পিডিএমভুক্ত নেজামে ইসলামের সভাপতি জনাব চৌধুরী মোহাম্মদ আলী, পিডিএম আওয়ামী লীগের সভাপতি জনাব নসরুল্লাহ খান, কাউন্সিল লীগের সভাপতি জনাব দৌলতানা, এনডিএফ প্রেসিডেণ্ট জনাব নূরুল আমীন ও জামাতে ইসলামীর অস্থায়ী আমীর জনাব তোহায়েল মোহাম্মদ সাক্ষর করেন।

পূর্ণ বিবরণঃ

 ঘোষণায় তারা বলেছেন, তাদের দৃঢ় বিশ্বাস বর্তমানের এক ব্যক্তির স্বৈরাচার ও জুলুমের শাসন জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে অবনতি ও ধ্বংস ডেকে এনেছে। বিশেষ করে এই সরকার সচেতনভাবে এবং অবাধ গতিতে ইসলামবিরোধী জীবন ব্যস্থার প্রবর্তন করেছেন এবং জনগণকে সমস্ত প্রাথমিক ও মৌলিক অধিকার এবং সার্বভৌম অধিকার থেকে বঞ্চিত করে একটি পুরোপুরি অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করেছেন।

 এই শাসন ব্যবস্থা সকল স্তরের মানুষের উপর বিশেষ করে ছাত্র, শ্রমিক, কৃষক এবং অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষের উপরে নির্যাতন চালানোর অপরাধে অপরাধী।

 ঘোষণায় বলা হয়, এই অগণতান্ত্রিক সরকার দেশের গুটিকয়েক পরিবারের হাতে সকল সম্পদ জমা করার পরিকল্পিত নীতি অনুসরণ করেন। ক্ষমতাসীন চক্রের কারসাজীতে দুর্নীতি সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। আমলাতন্ত্র এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক বিভাগে দুর্নীতি এই সরকারের একটি স্থায়ী ব্যবস্থার রূপ নিয়েছে।

 এই স্বৈরাচারী সরকার রাসহীনভাবে তাদের নির্যাতনমূলক শাসন চালিয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতাদের ব্যাপকভাবে আটক রেখে, অন্যায়ভাবে জরুরী অব্যাহত রেখে এবং মৌলিক এবং নাগরিক অধিকার পরিপন্থী আইনের ব্যাপক প্রয়োজন দ্বারা এই সরকার টিকে আছে।

 এই সরকার এমন এক অবস্থার সৃষ্টি করেছে, যার ফলে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে এবং তা বেড়ে যাচ্ছে। আর এই পরিবেশে বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক সুযোগ ও