পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৪৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খণ্ড
410
শিরোনাম সূত্র তারিখ
১১ দফার দাবীতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে
তোলার আহবান
ছাত্রসমাজের প্রচারপত্র জানুয়ারী ১৯৬৯

সংগ্রামী ছাত্রসমাজের ডাক

এগার দফার দাবীতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়িয়া তুলুন

 স্বৈরাচারী সরকারের দীর্ঘদিনের অনুসৃত জনস্বার্থবিরোধী নীতির ফলেই ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর জীবনে সংকট ক্রমশঃ বৃদ্ধি পাইয়া চলিয়াছে। শাসনে-শোষনে অতিষ্ঠ হইয়া ছাত্র-জনতা, ছাত্র-গণআন্দোলনের পথে আগাইয়া আসিয়াছেন।

 আমরা ছাত্রসমাজ ও দেশবাসীর স্বার্থে নিম্নোক্ত ১১ দফার দাবীতে ব্যাপক ছাত্র-গণআন্দোলনের আহবান জানাইতেছিঃ

১ (ক) স্বচ্ছল কলেজসমূহকে প্রাদেশিকীকরণের নীতি পরিত্যাগ করিতে হইবে এবং জগন্নাথ কলেজসহ প্রাদেশিকীকরণকৃত কলেজসমূহকে পূর্বাবস্থায় ফিরাইয়া দিতে হইবে।

 (খ) শিক্ষার ব্যাপক প্রসারের জন্য প্রদেশের সর্বত্র বিশেষ করিয়া গ্রামাঞ্চলে স্কুল-কলেজ স্থাপন করিতে হইবে এবং বেসরকারী উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত স্কুল-কলেজসমূহকে সত্বর অনুমোদন দিতে হইবে। কারিগরী শিক্ষা প্রসারের জন্য পর্যাপ্তসংখ্যক ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, পলিটেকনিক, টেকনিক্যাল ও কমার্সিয়াল ইনস্টিউট স্থাপন করিতে হইবে।

 (গ) প্রদেশের কলেজসমূহে দ্বিতীয় শিফটে নৈশ আইএ; আইএসসি; আইকম ও বিএ; বিএসসি; বিকম, এবং প্রতিষ্ঠিত কলেজসমূহে নৈশ এমএ ও এমকম ক্লাস চালু করিতে হইবে।

 (ঘ) ছাত্র বেতন শতকরা ৫০ ভাগ হ্রাস করিতে হইবে। স্কলারশীপ ও ষ্টাইপেণ্ডের সংখ্যা বৃদ্ধি করিতে হইবে। এবং ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করার অপরাধে স্কলারশীপ ও ষ্টাইপেণ্ড কাড়িয়া লওয়া চলিবে না।

 (ঙ) হল, হোষ্টেলের ডাইনিং হল, ও কেণ্টিন খরচার শতকরা ৫০ ভাগ সরকার কর্তৃক ‘সাবসিডি’ হিসাবে প্রদান করিতে হইবে।

 (চ) হল ও হোস্টেল সমস্যার সমাধান করিতে হইবে।

 (ছ) মাতৃভাষার মাধ্যমে সর্বস্তরে শিক্ষার ব্যবস্থা করিতে হইবে। অফিস আদালতে বাংলা ভাষা চালু করিতে হইবে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্য্যাপ্ত সংখ্যক অভিজ্ঞ শিক্ষকের ব্যবস্থা করিতে হইবে। শিক্ষকের বেতন বৃদ্ধি করিতে হইবে এবং স্বাধীন মতামত প্রকাশের অধিকার দিতে হইবে।

 (জ) অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করিতে হইবে। নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার করিতে হইবে।