পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

474 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড

  • যুক্তরাষ্ট্ৰীয় ( ফেডারেল ) সরকারের ক্ষমতা দুইটি বিষয়ে সীমাবদ্ধ থাকিবে, -যথা, দেশরক্ষা ও বৈদেশিক নীতি অবশিষ্ট সকল বিষয়ে অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির ক্ষমতা থাকিবে নিরঙ্কুশ।
  • সমগ্র দেশের জন্য দুইটি পৃথক অবাধে বিনিময়যোগ্য মুদ্রা চালু থাকিবে।

অথবা বিশেষ ব্যবস্থা শর্তাধীনে মুদ্রা ও অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্ৰীয় বিষয়রপে গৃহীত হইতে পারে। এই ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্ৰীয় কর্তৃকত্বাধীন “ ষ্টেট ব্যাঙ্কের” পরিচালনার অধীনে দুই অঞ্চলে দুইটি “রিজার্ভ ব্যাঙ্ক” থাকিবে। এই আঞ্চলিক রিজার্ভ ব্যাঙ্কগুলি আঞ্চলিক সরকারের অর্থনৈতিক ব্যাপারে পরামর্শ দান করিবে এবং যাহতে এক অঞ্চল হইতে অন্য অঞ্চলে অবাধে অর্থ ও মূলধন পাচার হইতে না পারে তাহার কার্যকরী ব্যবস্থা অবলম্বন করিবে।

  • শাসনসম্বন্ধীয় কার্যনির্বাহের সুবিধার জন্য এবং নানা প্রকার জটিলতা এড়াইবার জন্য কর ও শুল্ক ধার্যের দায়িত্ব অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির উপরই ন্যস্ত থাকা বাঞ্ছনীয়। এই ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারকে কোন ক্ষমতা অর্পনের প্রয়োজন নাই। তবে প্রয়োজন নাই। তবে প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির রাজস্বের একটি স্বীকৃতি অংশ শাসনতান্ত্রিক ব্যবস্থানুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের অবশ্য প্রাপ্য হইবে। অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ স্বয়ংক্রিয় নিয়মে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব তহবিলে জমা হইবে।
  • যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গ রাষ্ট্রের বহির্বাণিজ্যের পৃথক হিসাবে রক্ষা করিতে এবং বহির্বাণিজ্যের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রা অঙ্গ রাষ্ট্রগুলির এখতিয়ারাধীন থাকিবে। যুক্তরাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা সমান হারে বা সর্বসম্মত কোন হারে অঙ্গ রাষ্ট্রগুলিই মিটাইবে।

প্রতিনিধি প্রেরণ এবং স্বীয় স্বার্থে বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদনের ক্ষমতা দান করিতে হইবে।

  • আঞ্চিলিক সংহতি ও শাসনতন্ত্র ও শাসনতন্ত্র রক্ষার জন্য শাসনতন্ত্রে রাষ্ট্রগুলিকে স্বীয় কর্তৃত্বাধীনে আদা সামরিক বা অঞ্চলের সেনাবাহিনী গঠন ও রাখার ক্ষমতা দিতে হইবে।

শাসনতন্ত্রে কার্যকরী এবং যথোপযুক্ত ব্যবস্থা অবলম্বন করতে হইবে যাহাতে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সামরিক ও বেসামরিক চাকুরিতে উভয় অঞ্চলের লোকসংখ্যা অনুপাতে নিযুক্ত হইতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর্তৃত্বাধীন সরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা ও বিভাগসমূহ এমনভাবে স্থাপন করিতে হইবে এবং যুক্তরাষ্ট্ৰীয় সরকারের ব্যয়, বিনিয়োগ ও নির্মাণকার্য এমণভাবে পরিচালিত হইবে যাহাতে পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলের লোকসংখ্যা অনুপাতে নিযুক্ত হইতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর্তৃত্বাধীন সরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী সংস্থা ও বিভাগসমূহ এমনভাবে স্থাপন করিতে হইবে এবং যুক্তরাষ্ট্ৰীয় সরকারের ব্যয়, বিনিয়োগ ও নির্মাণকার্য এমনভাবে পরিচালিত হইবে যাহাতে পাকিস্তানের উভয় অঞ্চলের লোক জনসংখ্যার অনুপাতে সমান সুযোগ ও সুবিধা লাভ করিতে পারে। অর্থনৈতিক আদর্শ আওয়ামী লীগের আদর্শ স্বাধীন, শোষণহীন ও শ্রেণীহীন সমাজব্যবস্থা কায়েম করা। সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থার মাধ্যমেই বর্তমানের শোষণ, বৈষম্য, অবিচার ও দুর্দশার হাত হইতে দেশকে মুক্ত করা সম্ভব বলিয়া আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠানকল্পে সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত লক্ষ্য। শিল্প ; যুগ যুগ ধরিয়া নির্মম শোষণের ফলে পাকিস্তান সামগ্রিকভাবে অনুন্নত অবস্থায় রহিয়া গিয়াছে। দেশের মানোন্নয়নের জন্য ইহার প্রাকৃতিক ও কৃষিজ সম্পদের ব্যবহার দ্বারা সুষমভাবে দেশকে শিল্পায়িত করা আওয়ামী