পাতা:বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্র (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৫১০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

483 বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ দলিলপত্রঃ দ্বিতীয় খন্ড সরবরাহের সুষ্ঠু ব্যবস্থা, ফসলের নতুন বীজ সরবরাহ, বিদেশ থেকে উন্নত যন্ত্রপাতি এসে কৃষি ব্যবস্থায় প্রবর্তন এবং মুনাফা প্রাধান্যমূলক কৃষিনীতি পশ্চিম পাকিস্তানে বিপ্লব সংঘটন সম্ভবপর করেছে।” (পৃষ্ঠা ৩০৭ ও ৩০৮)। কমিশন পশ্চিম পাকিস্তানে কৃষি উৎপাদনের হার বৃদ্ধিরও একটা তালিকা দিয়েছেন। এই হার নীচে দেয়া হল। ১৯৪৯-৫০-১৯৫৯ ৬০ গম ১.১ ভাগ এবং অন্যান্য প্রধান শস্য ২.৩ ভাগ। ১৯৫৯-৬০-১৯৬৭-৬৮ গম ৪.০ এবং অন্যান্য প্রধান শস্য ৫.০। (পৃষ্টা ৩০৯)। কৃষি ক্ষেত্রে উন্নতির ফলে পশ্চিম পাকিস্তানে কৃষিকার্যের জন্য প্রয়োজনীয় ছোট ছোট ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের বিকাশে শুরু হয় এবং আমদানী বাণিজ্য ও বৈদেশিক গ্রান্ট ও লোনের সিংহভাগ লাভ করায় সেখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাথমিক শিল্প-ভিত্তি গড়ে ওঠে। পূর্ব পাকিস্তান এদকি থেকে এই শিল্প-ভিত্তির কাঁচামাল যোগানদার এবং উৎপাদিত দ্রব্যের ক্রেতার ভূমিকায় থেকে যায়। পশ্চিম পাকিস্তানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের শিল্প-ভিত্তি প্রতিষ্ঠা লাভ করায় সেখানে স্থানীয় পুঁজির যেমন বিকাশ ঘটে, তেমনি বাইরের পুঁজিও সেখানে আকৃষ্ট হয় । পিয়ার্সন কমিশন পূর্ব পাকিস্তানের দুর্ভোগ্যের প্রাথমিক কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে বলেছেন, “উন্নত পাকিস্তানের কৃষিতে এই পরিবর্তন অনুপস্থিত। ফলে খাদ্যোৎপাদন তুলনামূলকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে রয়েছে। কৃষকদের পক্ষ বছরে দুটি কিংবা তিনটি ফসল ফলানেরও সম্ভব হবে। অসম কৃষিনীতি দু'অঞ্চলের মদ্যে % অর্থনৈতিক বৈষম্যের পরিসর বিরাটভাবে বৃদ্ধি করেছে। (পৃষ্ঠা ৩০৮)। পূর্ব পাকিস্তানের কৃষি উন্নয়ন সম্পর্কে কমিশন সুস্পষ্ট ভাষায় সুপারিশ করেছেন-আধুনিক টেকনোলজির সাহায্যে পূর্ব পাকিস্তানে পাট ও ধান উৎপাদনের ব্যবস্থা হওয়া প্রয়োজন এবং কেন্দ্রীয় সরকারেরই উচিত এই উন্নয়ন পরিকল্পনার জন্য অর্থ ও বিশেষজ্ঞ সরবরাহের দায়িত্ব গ্রহণ করা।